কালবৈশাখীতে ডুবে গেছে লঞ্চ, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ঢালচরবাসীর
ভোরের কালবৈশাখীতে দ্বীপজেলা ভোলায় দুটি নৌযানডুবির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি নোঙর করা লঞ্চ, অপরটি ভাঙনরোধে ব্লক তৈরির কাজে নিয়োজিত পাথরবোঝাই বলগেট। শনিবার (১৭ এপ্রিল) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের কর্মকর্তারা এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ভোলা জেলার সর্বদক্ষিণের উপজেলা চরফ্যাশনের সর্বশেষ ইউনিয়ন ঢালচরের ঘাটে নোঙর করা ছিল মো. আজিজের এমএল ক্যাটাগরির একটি লঞ্চ। এই লঞ্চ কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র বাহন ছিল। আজ সকালে যাত্রী নিয়ে কচ্ছপিয়া যাওয়ার কথা ছিল লঞ্চটির।
বিজ্ঞাপন
লঞ্চটির কোনো নাম ছিল না উল্লেখ করে লঞ্চ-মালিক আবদুল আজিজের চাচাতো ভাই শাহজাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোলার মফিজ কোম্পানি ও আমার চাচাতো ভাইয়ের মালিকানায় লঞ্চটি ছিল। লকডাউনের কারণে নোঙর করা ছিল লঞ্চটি।
ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালাম হাওলাদার জানিয়েছেন, লঞ্চ নোঙর করার কোনো স্থান না থাকায় নদীর তীরেই থামিয়ে রাখতে হতো। ঝড়ে সেখানে ডুবে গেছে ঢালচর কচ্ছপিয়ার একমাত্র বাহনটি।
বিজ্ঞাপন
ঢালচর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে ঘাটে বাঁধা লঞ্চটির ওপরের অংশ উড়িয়ে নিয়ে যায়। পরে প্রচণ্ড বাতাসের কারণে পানির চাপে লঞ্চের তলা ফেটে ডুবে যায়। স্থানীয় ব্যক্তিরা ও লঞ্চের স্টাফরা দঁড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামালের ক্ষতি হয়েছে।
ঢালচর ইউনিয়র আওয়ামী লীগের সদস্য কাউছার ফরাজী জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে লঞ্চ ডুবে যাওয়ায় ঢালচর ইউনিয়নের সঙ্গে মূল ভূখণ্ড চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এই লঞ্চটি ছিল ঢালচরবাসীর যোগাযোগের অনত্যম মাধ্যম। লঞ্চের মালিক মো. আজিজ ঢালচরের মানুষের সুবিধার্থে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ঢালচর থেকে চরফ্যাশনের কচ্ছপিয়া ঘাটে যাত্রী ও মালামালে আনা-নেওয়ায় এই লঞ্চের সার্ভিস দিয়ে আসছিল। মূলত ঢালচরে কোনো শাখা খাল না থাকায় নদীর পাশে ঘাট করতে হয় লঞ্চ কিংবা মাছ ধরার নৌকাগুলোকে। এতে প্রায়ই ঝড়ের কবলে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে একই সময়ে ভোলার মেঘনা নদীতে পাথরবাহী একটি বলগেট ডুবে গেছে। পাথরগুলো ভোলার মেঘনা নদীর ভাঙনরোধে ব্লকের কাজে ব্যবহারের জন্য আনা হচ্ছিল।
ইলিশা ফেরিঘাটের নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন চন্দ্র পল ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিশোরগঞ্জ থেকে এমভি জেআরবি নামের একটি বলগেট পাথর নিয়ে ভোলার জোড়খাল এলাকায় কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে নিখোজঁ হয়ে যায়। এ ঘটনায় কোনো হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ