ওয়ার্ড বয়ের বদলির চিঠি উধাও
ফাইল ছবি
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর থেকে বদলির আদেশপত্র পাঠানোর এক মাস পার হলেও ওয়ার্ড বয় মো. মাসুদ রানাকে যোগদান করতে দেয়া হচ্ছে না রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। করা হচ্ছে না তার পদায়ন।
নিয়ম অনুযায়ী বদলির আদেশ পাওয়ার পর তাকে পদায়ন ও নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে দেয়ার কথা। কিন্তু রামেক হাসপাতালের পরিচালকের দফতর বিষয়টি এক মাস ধরে ঝুলিয়ে রেখেছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন মাসুদ রানা। এখন কি করা উচিত তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত তিন বছর ধরে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওয়ার্ড বয় ছিলেন মো. মাসুদ রানা। গত ৮ নভেম্বর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলির জন্য সিভিল সার্জনের কাছে সুপারিশ করেন। গত ২১ নভেম্বর রাজশাহীর সিভিল সার্জন তার আবেদনপত্রটি রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতরে পাঠালে তিনি তাকে বদলির সুপারিশ করেন।
এদিকে গত ২৮ নভেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য ওয়ার্ড বয় মো. মাসুদ রানাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি ও পদায়নের জন্য দাফতরিক আদেশপত্র জারি করেন। মাসুদ রানাকে পদায়নের আদেশপত্রটি রামেক হাসপাতালের পরিচালকের প্রশাসনিক দফতরে ওই দিনই পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু রহস্যজনক কারণে গত এক মাসের বেশি সময় পরও মাসুদ রানাকে পদায়ন করা হয়নি। এ কারণ খুঁজে হয়রান হচ্ছেন হাসপাতালের অন্যান্য কর্মচারীরাও। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের পাঠানো চিঠিটি কোথায় আছে সেটাও এখন সংশ্লিষ্ট কেউ বলতে পারছেন না।
রামেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল গণি বলেন, তার কাছে মাসুদ রানার বদলির চিঠিটি নেই। কোথায় আছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমি বলতে পারছি না। কে বলতে পারবে সেটাও তিনি বলতে চাননি। তিনি বলেন, পরিচালক সাহেব বলতে পারবেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. আব্দুল হান্নান জানান, ওয়ার্ড বয় মো. মাসুদ রানার বদলি সংক্রান্ত চিঠির বিষয়টি তার জানা নেই। তাহলে চিঠিটি গেল কোথায় অথবা কোন দফতরে গেছে সেটাও তিনি জানাতে পারেননি।
একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর বদলি ও পদায়ন নিয়ে এই ধরনের টালবাহানার পেছনে ভিন্ন কি কারণ আছে জানতে চাইলে ডা. হান্নান বলেন, এটা খুঁজে দেখে তিনি পরে বলতে পারবেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামেক হাসপাতালের সদ্য বদলি হওয়া পরিচালকের সময়ে হাসপাতালের প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগে পছন্দের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে বিভিন্ন স্বার্থ হাসিল করা হয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্য থেকে বদলি পদায়ন, কেনাকাটা থেকে এমএসআর সরবরাহ-প্রতিটি ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান-তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। সাবেক পরিচালকের রেখে যাওয়া সিন্ডিকেটের কারণে সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা কর্মচারীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি হতে পারেন না বলেও ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
এসপি