আট ধরনের খাবার দিয়ে তৈরি করা ইফতারের প্যাকেট সারিবদ্ধভাবে সড়কে সাজিয়ে রাখা হয়েছে, পাশেই রাখা হয়েছে একটি করে পানির বোতল। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) থেকে প্রতিদিন শহরের সার্কিট হাউস গোল চত্বর এলাকায় বিত্তবান ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ‘পটুয়াখালীবাসী’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে নিম্ন আয়ের মানুষ কিংবা অসহায় মানুষদের জন্য ইফতারির এ ব্যতিক্রমী আয়োজন।

রিকশাচালক লিটন বলেন, লকডাউনের কারণে আয় কম। মানুষ রাস্তায় না বের হলে আমাদের রিকশায় উঠবে কে? রিকশায় যাত্রী না হলে টাকা পামু কোথায়? পকেটে টাকা নাই। রিকশা নিয়ে যাচ্ছি, এ সময় সবুজ গ্যাঞ্জি পরা ভাইরা বলল, রোজা আছেন? হাঁ বলার সাথে সাথে একটা প্যাকেট আর একটা পানির বোতল হাতে দিয়ে দেয়।

রিকশাচালক কালাম বলেন, যারা আমাগো মতো গরিবের ইফতার করাইছে, আল্লাহ হ্যাগোর আরও বড়লোক বানাক। ভবিষ্যতে আমার মতো অন্য সবাইরে যেন দিতে পারে, আল্লাহ সেই তৌফিক দান করুন।

জানা গেছে, পটুয়াখালীবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যতিক্রমী আয়োজনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে আপলোড করার পর থেকে ভাইরাল হয়েছে এবং ব্যাপক প্রসংশা কুড়িয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মতিন বলেন, এভাবে ইফতার দেওয়া হয়, এটা প্রথম দেখলাম। এটা সবার জন্য অনুকরণীয়। এখানে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। যাতে এই সংগঠন আরও ভালো কাজ করতে পারে।

পটুয়াখালীবাসী সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান রায়হান ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনার এই বিরূপ পরিস্থিতিতে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে সাধ আর সাধ্যের মিল করে অনেকেই ইফতার তৈরি করতে পারছেন না অথবা কিনতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় বিত্তবানদের সহযোগিতায় আমরা ইফতার দেওয়ার এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছি। প্রতি প্যাকেটে মুড়ি, বুট, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, জিলাপি, খেজুর এবং সঙ্গে খাবার পানির একটি বোতল।

তিনি বলেন, প্রতিদিন আমরা ৫০ জন রোজাদার ব্যক্তির জন্য এই আয়োজন করে থাকি। ইফতারির সব আইটেম স্থানীয় দোকানির কাছ থেকে অর্ডার দিয়ে তৈরি করা হয়। ইফতারি আইটেম তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ে প্যাকেট করে শহরের প্রবেশপথ সার্কিট হাউস গোল চত্বর এলাকায় তা সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখি। নির্দ্বিধায় যে যার মতো করে প্রয়োজন অনুসারে সেই ইফতারের প্যাকেট নিয়ে নেয়। এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের বিশেষ একটি বিষয় হলো, কে নিচ্ছেন বা কে দিচ্ছেন, তাদের কারও ছবি তোলা হয় না।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রমজান মাসের এই আয়োজনে আপনিও সহযোগিতা করে এসব মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারেন। আপনার নাম আমরা প্রকাশ করব না। আমাদের সহযোগিতা করতে চাইলে বিকাশ : (+8801736799979) নম্বরে যোগাযোগ করুন।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এনএ