নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রথম স্ত্রীর মতামত উপেক্ষা করে দ্বিতীয় বিয়ে করার জেরে বাগবিতণ্ডায় এক দম্পতি কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

মৃতরা হলেন- উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরক বড়াইল গ্রামের মো. সুমন (৪০) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী গোলাপী খাতুন (৩০)।

এর আগে বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরক বড়াইল গ্রামে নিজের বাড়িতে কীটনাশক খেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তারা। 

ওই দম্পতির স্বজন, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি প্রথম স্ত্রীর অমতে গোলাপী খাতুন নামে এক নারীকে বিয়ে করেন সুমন। বিয়ের পর প্রথমবারের মতো বুধবার দ্বিতীয় স্ত্রী গোলাপীকে গ্রামের বাড়ি বুজরক বড়াইলে নিয়ে আসেন। দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে আনার পরই প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া লেগে যায়। এর জেরে রাত ৮টার দিকে সুমন ও গোলাপী নিজেদের ঘরে একসঙ্গে কীটনাশক জাতীয় কিছু খান। কিছুক্ষণ পর তারা দুজন রক্তবমি করা শুরু করেন। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোলাপীর মৃত্যু হয়। এর আড়াই ঘণ্টা পর সুমনেরও মৃত্যু হয়।

নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আবু আনছার আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সুমন ও গোলাপীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনে তার স্বজনরা। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওয়ার্ডে ভর্তির পর দুইজনকেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছিল। তবে আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় দুজনের কেউই যাননি। পরে রাত সাড়ে ১১টা থেকে দুইটার মধ্যেই দুজন মারা যান। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মরদেহ দুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

মহাদেবপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাংসারিক ঝামেলার কারণে গ্যাস বড়ি (কীটনাশক) খেয়ে ওই দম্পতি আত্মহত্যা করেছেন বলে আমরা ধারণা করছি। নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দুটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরমান হোসেন রুমন/আরএআর