বগুড়ায় দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিল ছাত্রলীগ

বগুড়ার সাবগ্রাম এলাকার দরিদ্র কৃষক সোহরাব হোসেন (৬৫)। লকডাউনে দরিদ্র পরিবারের চাষ করা ২৮ শতাংশ জমির ধান পেকে গেলেও কেটে তোলার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা ছিল না তার। যেখানে দিন চলা কঠিন সেখানে ধান কেটে ঘরে তোলার কথা ভাবায় মুশকিল।

বিষয়টি জানতে পারেন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মুকুল ইসলাম। খবর পেয়ে সাবগ্রামের চাঁন্দপাড়া এলাকায় গিয়ে ওই কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

যোগাযোগের পর বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে কৃষককে সঙ্গে নিয়ে ধান কাটতে শুরু করেন মুকুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রলীগের কর্মীরা।

দুপুর ১২টার পর বগুড়া সদরের সাবগ্রামের চান্দপাড়া মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মুকুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রলীগের কর্মীরা ধান কাটছেন। এ সময় কথা হয় কৃষক সোহরাব হোসেনের সঙ্গে।

কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ধান কাটা লিয়ে খুব চিন্তাত আচনো (আছি)। হামার কাচে ট্যাকা নাই, কিষান লিয়ে ধান কাটমো। একন কিষানেকেরে মেলা দাম, ৪শ ট্যাকা দিন চায়। ২৮ শতক ভিউয়ের (জমির) ধান কাটতে ৩ হাজার ট্যাকা চায়। যেটি হামার দিনচলা কটিন, সেটি ধান কাটা সপন দ্যাকার লাগান।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুকুল হামাকেরে (আমাদের) পাশের পাড়ার ছোল (ছেলে)। হামাক কালকে আতোত (রাতে) দ্যাকা করেক বলে ধান কাটপি, আবার ঘরে তুলে দিবি। হামার বিশ্বাস হয়নি। সকালে যখন ওরা আসলো হামি ভাববার পাইনি। একন ওরা ধান কাটিচ্চে (কাটছে), আবার বাড়িত লিয়ে যাবি দিবার।’

জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মুকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকে। আমরা জানতে পারি কৃষক সোহরাব হোসেন অর্থাভাবে ধান কাটতে পারছেন না। তাই আমরা সবাই মিলে ধান কেটে দিচ্ছি। ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মী রোজা রেখে ধান কাটছেন।

মুকুল ইসলাম আরও বলেন, ধান কাটা শেষে আমরা কৃষকের বাড়িতে সেই ধান পৌঁছে দেব। যাতে তাকে আলাদা করে ধান নিয়ে যেতে অর্থের ব্যয় না করতে হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরাও তার সঙ্গে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দরিদ্র কৃষকের জমি ধান কাটতে এসেছি।

কৃষক সোহরাব হোসেনের জমিতে মুকুল হোসেনের সঙ্গে আরও ধান কাটেন জেলা ছাত্রলীগের কর্মী ইউসুফ, শামীম, জীম, নুর, মোমিন, আহাদ, নাবিল, শাহরিন, শুভ ও মেহেদী।

তারা সকলেই গত বছর দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে দিয়েছিল। এ বছরও তারা দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন। এ বছর লকডাউনের শুরু থেকে জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মুকুল ছিন্নমূল মানুষের মাঝে সাহরি বিতরণ করে যাচ্ছেন।

সাখাওয়াত হোসেন জনি/এমএসআর