লকডাউনে দোকান খুলে হতাশ ব্যবসায়ীরা
লকডাউনে দোকান খুললেও ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম
টানা লকডাউনে বন্ধই ছিল রাজশাহীর অধিকাংশই দোকানপাট। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দোকান খুলে বসেন নগরীর আরডিএ মার্কেট এবং নিউ মার্কেটের দোকানিরা। কিন্তু প্রথম দিনই হতাশ হয়েছেন তারা। ক্রেতাদের উপস্থিতি একেবারেই হাতে গোনা। পথে পথে লোকজনকে আটকে দিয়েছে পুলিশ। তবে হাল ছাড়তে নারাজ দোকানিরা। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় তারা যে কোনো মূল্যে দোকান খোলা রাখতে চান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দোকান খুলতে শুরু করেন আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। দোকান খোলা ছিল বিকেল ৩টা পর্যন্ত। কিন্তু সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকান খুলে রেখেছিলেন নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। দোকান খোলা আর বন্ধের ভেতর ছিলেন সাহেববাজার কাপড়পট্টির দোকানিরা।
বিজ্ঞাপন
এর আগে দুপুরের দিকে দোকান খোলা না খোলা নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ব্যবসায়ী নেতারা। সেখানে তাদের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল জানান, ব্যবসায়ীরা তার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। ২৮ এপ্রিলের পর সরকার লকডাউন শিথিল করলে তারা ব্যবসা করার সুযোগ পাবেন। আজ দোকান বন্ধ করবেন।
বিজ্ঞাপন
তবে জেলা প্রশাসককে দোকান বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও কথা রাখেননি দোকানিরা। তারা বিকেল পর্যন্ত দোকান খুলে রেখেছিলেন।
এদিকে সকাল থেকে পুলিশের তরফ থেকে দোকান খুলতে বাধা দিতে দেখা যায়নি। তবে রাস্তায় বের হওয়া লোকজনকে অন্যান্য দিনের মতো জেরা করতে দেখা গেছে পুলিশকে।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে ঈদের আগে লকডাউনের বিকল্প চেয়েছিলেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, করোনা পরিস্থিতির কারণে টানা লকডাউনে তারা পুঁজি হারিয়ে ফেলেন। আসন্ন ঈদ সামনে রেখে তারা চেষ্টা করছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু ফের লকডাউন পড়ে যাওয়ায় তারা ফের সংকটে পড়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে দোকানের মালিক ও কর্মচারীদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, তারা প্রশাসনের তরফ থেকে অনুমতি ছাড়াই দোকান খুলেছিলেন। কিছু ক্রেতাও এসেছিল। প্রথম দিন হওয়ায় সংখ্যায় তা একেবারেই কম। প্রচার হলে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়বে।
মার্কেটে কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গেও কথা হয়। নাম প্রকাশ না করে তারা জানান, আসলে অন্য কাজে এসেছিলেন তারা। কিন্তু দোকান খোলা দেখে মার্কেটে ঢুকে পড়েন। অনেকেই কেবল ঘুরে খুরে দেখেছেন। কেনাকাটাও করেছেন কেউ কেউ।
এ নিয়ে সরাসরি গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি ব্যবসায়ীরাও। নাম প্রকাশ না করে আরডিএ মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সকাল থেকে তারা দোকান খুলে বসেই আছেন এক রকম। ক্রেতা নেই বললেই চলে। প্রয়োজন থাকলেও লকডাউনের কারণে অনেকেই বের হতে পারেননি। যারা সুযোগ পেয়েছেন দোকান খোলা পেয়ে ঘুরে যাচ্ছেন।
বিয়ষটি স্বীকার করেছেন নগরীর নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মঞ্জুর হোসেন। তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই দোকান খুলেছিলাম। না খুলেও উপায় নেই। লোকসানের পাল্লা ভারি হচ্ছে। অনেকেই পুঁজি হারাচ্ছেন। আবার দোকান খুলেও ক্রেতা নেই। প্রথম দিন হওয়ায় প্রচার কিছুটা কম, এই কারণে ক্রেতাও কম। দোকান খোলার খবর ছড়ালে লোকজনের উপস্থিতিও বাড়বে।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর