অভিরঞ্জন দেবনাথ

৯০ বছর ববয়সী অভিরঞ্জন দেবনাথ ভ্রাম্যমাণ দর্জি। চাঁদপুর শহরের ছায়াবানী এলাকার প্রতাপসাহা রোডের বাসিন্দা তিনি। ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পর সংসারের দায়িত্ব কাঁধে পড়ে। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে শুরু হয় জীবনযুদ্ধ। দুই বেলা খাবার জোগানোর সংগ্রাম এখনো চলছে তার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই অভিরঞ্জনকে কাজে নামতে হয়। সেলাই মেশিনের সঙ্গে কখন তার জীবন আটকে গেছে, নিজেও জানেন না। দীর্ঘ ৮০ বছর ধরে অভিরঞ্জন ফুটপাতে দর্জির কাজ করেন। শহরের পালবাজার সেতুসংলগ্ন এলাকায় এলেই তাকে দেখা যায়।

অভিরঞ্জন দেবনাথ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তবু পেশা বদলে কারও কাছে হাত পাতেননি। মাথার ওপর পলিথিনের ছাউনি দিয়ে কাজ করেন। সারাদিন কাজ করে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে সংসার। একসময় বয়স্কভাতা পেতেন। এখন আর পান না।

অভিরঞ্জন দেবনাথ বলেন, ছোটবেলা থেকে জীবনযুদ্ধে নেমেছি। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। পালবাজার এলাকায় ৮০ বছর ধরে সেলাইয়ের কাজ করছি। সৎভাবে জীবনযাপন করছি। অনেক বয়স হয়েছে। এখন আর সেলাইয়ের কাজ নিয়ে আমার কাছে আসে না মানুষ। দোকানের লোকজন কাজ দিলে দিনে ১০০ টাকার মতো আয় হয়। না দিলে ৫০ টাকাও আয় হয় না।

অভিরঞ্জন বলেন, টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর আমার এক পা অবশ হয়ে যায়। চলাফেরা করতে খুব কষ্ট হয়। এরপরও সেলাইয়ের কাজ করি। না হয় খাবার জোটে না পরিবারের সদস্যদের। ভাড়া বাড়িতে থাকি। এ কাজ আর ভালো লাগে না। শরীর টানে না। ​আমি সরকারি সহযোগিতা চাই। এই বয়সে আর কষ্ট করতে পারছি না। লজ্জায় কারও কাছে হাত পাততেও পারি না।

এএম