আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের ছোট মোল্লাকান্দি ও খাসকান্দি গ্রামে দফায় দফায় সংঘর্ষ, শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল তিনটা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের কিছুটা বেগ পেতে হয়।  

স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খাসকান্দি গ্রামের নজির হালদারের লোকজন প্রথমে সাবেক ইউপি সদস্য নাছির মেম্বারের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালায়। একই সময়ে ছোট মোল্লাকান্দি গ্রামের সৈয়দ খাঁন গ্রুপের লোকজনও ছোট মোল্লাকান্দি গ্রামে থাকা নাছির মেম্বারের সমর্থকদের বাড়িঘরে ককটেল হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনার চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হলে নাসির মেম্বার গ্রুপের লোকজনও পাল্টা হামলা চালায়। দফায় দফায় হামলায় মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। 

নিরীহ মানুষের বাড়িঘরেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এক বছর ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে বহুবার হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ইতোমধ্যে প্রায় ১৩টি ভাঙচুর-বিস্ফোরণ মামলা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বিগত দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় যাদের নামে মামলা হয়েছে তাদেরকে এখনও আইনের আওতায় আনা হয়নি বলে দিনের পর দিন দুপক্ষ বার বার সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

হামলার বিষয়ে নাছির মেম্বার গ্রুপের লোকজন বলছে, নজির হালদারের লোকজন তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। অপরদিকে নজির হালদার পক্ষের লোকজন বলছে, নাছির মেম্বারের লোকজনও তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। তবে মোট কয়টি ঘর ভাঙচুর হয়েছে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছে বলে দাবি তাদের।

পুলিশ জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খাসকান্দির সামসুদ্দিন গ্রুপ ও ছোট মোল্লাকান্দির নজির হালদার গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দুই পক্ষ একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা।  তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুটি গ্রুপের লোকজন। একে অপরের ওপর হামলা চালায়, চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। 

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের লোকজনই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


ব.ম শামীম/আরএইচ