জিয়াউল হাসান টিটু

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মায়ের শ্বাসকষ্ট হতে থাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার পিঠে বেঁধে মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সেই সন্তান এবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

জিয়াউল হাসান টিটু ঢাকা পোস্টকে মোবাইল ফোনে জানান, নলছিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শনিবার (২৪ এপ্রিল) তিনি অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট দিয়ে পজিটিভ পেয়েছেন। তবে তা শেষপর্যায়ে আছে এবং তা গুরুতর কিছু নয়।

এছাড়া করোনার কোনো উপসর্গও তার মধ্যে নেই বলে জানান তিনি। তার মা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন জানিয়ে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন জিয়াউল হাসান।

জানা যায়, নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুম্পা সিকদার একটি ছোট আয়োজন করে জিয়াউল হাসানকে আজ সম্মান জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু করোনা পজিটিভ হওয়ার কথা টিটু নিজেই ইউএনওকে জানানোর পরে তিনি তাকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন। তিনি সুস্থ হলেই সংবর্ধনার আয়োজনটি করা হবে।

গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সূর্যপাশা গ্রামে হোম আইসোলেশনে থাকা করোনায় আক্রান্ত স্কুলশিক্ষিকা রেহানা পারভীনের (৫০) অক্সিজেন সেচুরেশন ৭০ এর নিচে নেমে যাওয়ায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।

মাকে বাঁচানোর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার শরীরে বেঁধে মোটরসাইকেলে করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান ছেলে জিয়াউল হাসান টিটু। মায়ের জীবন বাঁচাতে মোটরসাইকেলযোগে হাসপাতালে যাওয়ার দৃশ্যটি সেদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

বরিশাল মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ২৩ এপ্রিল মায়ের অক্সিজেন সেচুরেশন ৯৬ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ছেলে মেহেদী হাসান মিঠু, জিয়াউল হাসান টিটু এবং রাকিবুল হাসান ইভান।

জিয়াউল জেলার নলছিটি পৌরসভার বাসিন্দা। তিনি ঝালকাঠি জেলা সদরের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শাখার সিনিয়র অফিসার পদে কর্মরত রয়েছেন। তার ছোট ভাই রাকিব হাসান চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। আর বড় ভাই মেহেদী হাসান খুলনার দৌলতপুর থানায় উপপরিদর্শক পদে কর্মরত রয়েছেন।

জিয়াউলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম মোল্লা। তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার। ২০২০ সালের প্রথম রমজানে হাকিম মোল্লা মৃত্যুবরণ করেন। নলছিটি পৌরসভার সূর্যপাশা গ্রামের বাসিন্দা তারা।

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুম্পা সিকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি জিয়াউল হাসানকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছি। সুস্থ হলে আমরা তাকে সম্মানিত করতে চাই।

ইসমাঈল হোসাঈন/এমএসআর