লাশঘরে যমজ শিশু, খোঁজ মেলেনি বাবার
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় দুই জমজ শিশুকে ভর্তি করানোর পর থেকে বাবা পরিচয় দেওয়া বাবু নামের এক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালে ভর্তির ১২ ঘণ্টার মাথায় ওই দুই শিশুর মৃত্যু হলেও কেউ তাদের লাশ নিতে আসেনি।
স্বজনদের ঠিকানা নিশ্চিত না হওয়াতে শিশু দুটির লাশ হাসপাতালের মর্গে পড়ে রয়েছে। এদিকে বাবা পালিয়ে থাকা ও স্বজনদের পরিচয় না পেয়ে মৃত দুই শিশুর লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশও।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২২ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাত সোয়া ৩টার দিকে সদ্য জন্ম নেওয়া যমজ দুই শিশুকে মুমূর্ষু অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন এক ব্যক্তি।
ওই শিশু দুটিকে ভর্তি করানোর সময় তিনি বাবা হিসেবে পরিচয় দেন। হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রার বইতে শিশু দুটির বাবার নাম লেখা হয় বাবু। ঠিকানা উল্লেখ করা হয় রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা। যমজ ওই শিশু দুটি ছেলে।
বিজ্ঞাপন
শিশু দুটিকে ওই দিন রাতে চিকিৎসক মো. মোস্তফা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে শিশু বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ওই দিন দুপুর সোয়া ২টার দিকে যমজ শিশু দুটি মারা যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বাবা পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিটি ওই ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর ১২ ঘণ্টা পর শিশু দুটির মৃত্যু হয়। এরপর থেকে ওই দুই শিশুর ওয়ারিশ হিসেবে কোনো আত্মীয়স্বজনকে পাওয়া যায়নি। দুইদিন ধরে মৃত শিশু দুটির বাবা-মা ও স্বজনদের পরিচয় না জানতে পেরে বিপাকে পড়েছেন পুলিশ।
পুরো ঘটনাটি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানাকে অবহিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশের পক্ষ থেকে শিশু দুটির স্বজনদের খোঁজ করা হচ্ছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশীদ।
ঢাকা পোস্টকে তিনি জানান, রেজিস্ট্রারে অসম্পূর্ণ ঠিকানা দেওয়া রয়েছে। যা দেখে শিশু দুটির স্বজনদের পরিচয় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি।
এসআই মামুনুর রশীদ বলেন, শিশু দুটিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তির সময় যে নাম ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে গ্রামের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি কোনো ফোন নম্বরও দেওয়া হয়নি। ফলে বাবু নামে কাউকেই খুঁজে বের করা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ওয়ারিশ না থাকায় ওই শিশু দুটির লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। কারও খোঁজ না মিললে ময়নাতদন্ত শেষে অজ্ঞাতনামা হিসেবে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর