প্রেস ব্রিফিংয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বৃদ্ধ বাবাকে হত্যা করেছেন এক ছেলে। হত‌্যাকাণ্ডের সাড়ে ৯ মাস পর পুলিশের তদন্তে এমন চাঞ্চল‌্যকর তথ‌্য বেরিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় ইতোমধ‌্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতাররা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। 

শনিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ‌্য জানান। 

পুলিশ সুপার জানান, নবীগঞ্জ উপজেলার বাউশা ইউনিয়নের দেবপাড়া (বাশডর) গ্রামের দুটি পক্ষের মধ‌্যে বেশ কয়েক বছর ধরে গ্রাম‌্য বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে তাদের মধ‌্যে বেশ কয়েকটি মামলাও চলছে। গত বছরের ১৫ জুলাই গ্রামের দুই পক্ষের মধ‌্যে জলমহাল দখল নিয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দেবপাড়া গ্রামের জাহির আলী (৭৫) নামে এক বৃদ্ধা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন। ঘটনার পর নিহতের বড় ছেলে আরশ আলী বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ৯২ জনকে আসামি করে থানায় হত‌্যা মামলা করেন। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, হত‌্যাকাণ্ডের পর থেকেই বাদীপক্ষের লোকজনের আচরণ রহস‌্যজনক ছিল। পুলিশ তদন্ত করে হত‌্যাকাণ্ডের পর রক্তমাখা জামা ও ধারালো অস্ত্রের রক্তের সঙ্গে ডিএনএ টেস্টের মাধ‌্যমে জানতে পারে ভিকটিমের খাটের রক্তের সঙ্গে মিল রয়েছে। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত করে গত ২২ এপ্রিল বাদীপক্ষের মিসবাহ উদ্দিন নামে এক ব‌্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন‌্য থানায় নিয়ে আসে। থানায় জিজ্ঞাসাবাদে মিসবাহ উদ্দিন পুলিশের কাছে ঘটনা স্বীকার করেন। 

মিসবাহ উদ্দিন পুলিশকে জানান, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বড় ছেলে আরশ আলীর নেতৃত্বে সাতজন মিলে জাহির আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত‌্যা করেন। এর মধ‌্যে জালাল উদ্দিন নামে এক ব‌্যক্তি জাহির আলীর শরীরে আঘাত করেন। এ সময় তার বড় ছেলে আরশ আলী হাত চেপে ধরেন। মিসবাহ উদ্দিন ও শামসুল হক নামে অপর দুইজন দরজায় পাহারায় ছিলেন। হত‌্যার পর গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয় প্রতিপক্ষের লোকজন জাহির আলীকে হত‌্যা করেছে। 

পুলিশ সুপার বলেন, আসামি মিসবাহ উদ্দিন গত ২৩ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম‌্যাজিস্ট্রেট পবন চন্দ্র বর্মনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় শামসুল হক (৩৫) ও জিলু মিয়া নামে অপর দুই আসামি শনিবার একই আদালতে হত‌্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, নবীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

মোহাম্মদ নুর উদ্দিন/আরএআর