অনাবৃষ্টিতে ঝরে পড়ছে আম

খরা ও অনাবৃষ্টিতে ঝরে পড়ছে আম; বাড়ছে না আকার। বাগানজুড়ে গাছে গাছে প্রচুর আম এলেও ঝরে পড়ার পর এখন ফলন নিয়ে চিন্তিত বাগান মালিকরা। তারা বলছেন, সেচ দিয়েও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। বাড়ছে উৎপাদন খরচ।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুয়ায়ী, এই উপজেলায় ১ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের বাগান রয়েছে। এই সব জমি থেকে হেক্টর প্রতি ১৫ মেট্রিকটন হিসেবে ২৭ হাজার ৭৫ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা থেকে ১৬০০ টাকা মণ হিসেবে ১ হাজার কোটি টাকার আম বিক্রয় হবে।

জানা যায়, কয়েক বছর ধরে নাটোরের লালপুর উপজেলায় ব্যাপকহারে বেড়েছে আমের বাগান। এই উপজেলায় বিপুল পরিমাণ জমিতে আমের বাগান গড়ে উঠেছে। এবার গাছে গাছে ৯৫ শতাংশ মুকুল দেখে আশায় বুক বেঁধে ছিলেন আমচাষি ও ব্যাবসায়ীরা। কিন্তু টানা অনাবৃষ্টি ও তাপদাহের কারণে ঝরে পড়ছে আম।

আম ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন জানান, তার এই বছর ১৩ বিঘা বিভিন্ন জাতের আমের বাগান কেনা আছে। আমগাছে মুকুল ও গুটি ভালো এসেছিল কিন্তু খরা ও অনাবৃষ্টিতে আম ঝরে যাচ্ছে।

বাড়ছে না আমের আকার

তিনি আরও বলেন, যে বাগানের আম ২ লাখ টাকায় বিক্রয় করতেন এখন সেই বাগানের আম ৫০ হাজার টাকাতেও বিক্রয় করতে পারবেন না। আম বিক্রয় করে লাভ তো দুরের কথা এবার তার অনেক টাকা ক্ষতি হয়ে যাবে।

এদিকে কৃষি বিভাগ এবার বাম্পার ফলনের কথা বললেও আমচাষি ও বাগান মালিকদের কেউই মানতে পারছেন না এই তথ্য। আমের মুকুল আসার সময় আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে থাকলেও আম আসার সময় তীব্র তাপদাহও মৌসুমের শুরুতে শিলাবৃষ্টির প্রকোপে গাছ থেকে আম ঝরে যাচ্ছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আমচাষিদের রঙিন স্বপ্ন যেন এক নিমেষেই মলিন হয়ে গেছে।

আমচাষী আব্দুল করিম বলেন, এ বছর আমগাছে মুকুল আসার সময় পর্যন্ত আবহাওয়া মোটামুটি অনুকূলে ছিল। এরই মধ্যে মুকুল থেকে গুটি বেরিয়েছে, কিন্তু অনাবৃষ্টি ও দাবদাহে গুটি ঝরে যাচ্ছে। বাগানে হালকা সেচ দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। এ বছর আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, তীব্র খরার কারণে অনেক বাগানে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষক পর্যায়ে আম বাগানে নিয়মিত সেচ ও ছোট আমগাছ গুলিতে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টি হলে আম ঝরা বন্ধ হয়ে যাবে।

তাপস কুমার/এমএসআর