রংপুর কারামতিয়া জামে মসজিদ/ছবি: ঢাকা পোস্ট

গত বছরের মতো এবারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদগাহ মাঠ ও ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মেনে রংপুর জেলায় প্রায় ছয় হাজার মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা। ঈদের দিন সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত মসজিদে মসজিদে এসব ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) দুপুরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন রংপুর বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে মহল্লাভিত্তিক মসজিদে ঈদের জামাত আদায়ে মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন।

রংপুরে ঈদের প্রধান জামাত প্রতি বছর কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু করোনার বিস্তার রোধে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদগাহের পরিবর্তে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য বলা হয়েছে। এজন্য নগরের পাড়ামহল্লা ও গ্রামেগঞ্জে মসজিদ কমিটি তাদের সুবিধাজনক সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করবেন। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে বিকল্প স্থানে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থ করা হবে।

রংপুর নগরের কাচারি বাজার কোর্ট মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। এতে সিটি মেয়র, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। প্রথম জামাতে স্থান সংকুলান না হলে সেখানে দ্বিতীয় জামাতের ব্যবস্থা করা হবে।

এছাড়া জেলার সবচেয়ে বড় মসজিদ কারামতিয়া জামে মসজিদে সকাল ৯টায় প্রথম ও সকাল ১০টায় দ্বিতীয় জামাত, ধাপ লালকুঠি বাইতুল নুর জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, কারমাইকেল কলেজ জামে মসজিদে সকাল ৯টায়, রাধাবল্লভ তাকওয়া জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টা ও সাড়ে ৯টায়, পুলিশ লাইন জামে মসজিদে সকাল ৮টায়, শাপলা চত্বর আশরাফিয়া জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

রংপুর নগরীর কোর্ট মসজিদ

রংপুর সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়াও পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও গঙ্গাচড়ায় স্থানীয় মসজিদগুলোতে সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সুবিধাজনক সময়ে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সূত্র মতে, রংপুর মহানগরসহ জেলার আট উপজেলায় ছোট-বড় মিলে ৫ হাজার ৯০টি তালিকাভুক্ত মসজিদ রয়েছে। এছাড়া বেশকিছু ওয়াক্তি মসজিদ এবং নির্মাণাধীন নতুন মসজিদ রয়েছে, যা এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। সবমিলে প্রায় ছয় হাজার মসজিদ রয়েছে জেলায়।

এবার ঈদুল ফিতরের জামাত আদায় শেষে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তিসহ দেশে শান্তি-সমৃদ্ধি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সম্প্রীতি কামনায় মোনাজাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়াও মাদক, সন্ত্রাস, নাশকতা, জঙ্গিবাদ ও করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে মোনাজাত পরিচালনা করবেন ঈদ জামাতের খতিবগণ।

এদিকে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিং করে ঈদের জামাতে নামায় আদায় করতে হলে মুসল্লিদের জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে আসাসহ বাড়ি থেকে অজু করে আসতে বলা হয়েছে। মুখে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মানতে মুসল্লিদের আহ্বান করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিশু, জ্বর, সর্দি, কাশি, হাঁচিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ও অসুস্থ এবং বয়স্কদের মসজিদে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।

ঈদ উপলেক্ষে সিটি করপোরেশন থেকে নগরীর সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক লেখা পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হবে। এছাড়া ঈদের দিন হাসপাতাল, এতিমখানা, কারাগার ও শিশু পরিবারগুলোতে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্র ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালায় ঈদ আনন্দে মাতি সবাই, ঈদের আনন্দ ঘরে ঘরে, ঈদ আড্ডা, ঈদের নাটক আনন্দ আনন্দ প্রচারিত হবে বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএম