ধর্ষণচেষ্টা মামলার মূল আসামি বাসচালক শহীদ মিয়া

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে যাত্রীবাহী বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার মামলার মূল আসামি গ্রেফকার বাসচালক শহীদ মিয়াকে (২৬) জিজ্ঞাসাবাদ করতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে শহীদ মিয়াকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাগীব নূরের আদালতে হাজির করে পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আশেক সুজা মামুন বলেন, বাসচালক শহীদ মিয়া জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শহীদ মিয়া সিলেটের জালালবাদ থানার মোগলগাঁও ইউনিয়নের মোল্লারগাঁও গ্রামের তৌফিক মিয়ার ছেলে। ২ জানুয়ারি ভোরে সিআইডি পুলিশ সুনামগঞ্জের পুরাতন বাসস্টেশন থেকে তাকে আটক করে। 

রোববার (৩ জানুয়ারি) সিআইডির হেডকোয়ার্টারে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে শহীদ মিয়াকে দিরাই থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে সিআইডি। এ ঘটনায় ২৭ ডিসেম্বর গভীর রাতে হেলপার রশিদ আহমদকে ছাতকের বুরাইরগাঁও থেকে গ্রেফতার করে সিলেটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

হেলপার রশিদও ২৯ ডিসেম্বর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জাবনবন্দি দিয়েছেন। 

সুনামগঞ্জ আদালত পরিদর্শক সেলিম নেওয়াজ সোমবার দুপুরে বলেন, মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক রাগীব নূরের কাছে শহীদকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করলে তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়া হয়।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, শনিবার (০২ জানুয়ারি) ভোরে সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ঘটনার সাত দিন পর বাসচালক শহীদ মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

উল্লেখ্য, গত ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে ওই কলেজছাত্রীকে সিলেট থেকে ফাহাদ অ্যান্ড মাইশা পরিবহনের ওই বাসে তুলে দেন তার দুলাভাই। সুনামগঞ্জের ১৬ কিলোমিটার আগে একটি বাইপাস হয়ে দিরাইয়ে মেয়েটিকে নামিয়ে দিয়ে সুনামগঞ্জে যাওয়ার কথা ছিল বাসটির।

কিন্তু যাত্রীরা সব নেমে যাওয়ার পর বাসচালক শহীদ মিয়া কনডাক্টর বক্করকে দিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। সঙ্গে ছিলেন হেলপার রশিদ আহমদ।

ওই ছাত্রী আত্মরক্ষার জন্য চলন্ত বাস থেকে লাফ দেন। গ্রামবাসী তাকে উদ্ধার করে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

ঘটনার পরের দিন অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন মেয়েটির বাবা। ২৮ ডিসেম্বর ভোরে সুনামগঞ্জ জেলার গোবিন্দগঞ্জ বাজারের বুঙ্গাইরগাঁও থেকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে হেলপার রশিদকে গ্রেফতার করে পিবিআই।

এ সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণচেষ্টার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান পি‌বিআই সিলেটের পু‌লিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান।
২৯ ডিসেম্বর আদালতে ঘটনায় নিজের সম্পৃক্তার কথা স্বীকার করেন হেলপার রশিদ। পরে আদালত রশিদকে কারাগারে পাঠায়।

এমএসআর