আল আমিন

সিলেট নগরের আখালিয়া এলাকায় আল আমিন (১৬) নামের এক কিশোরকে বেঁধে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় আখালিয়া বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

পরবর্তীতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সাহায্যে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে বর্তমানে শিশুটি বাড়িতে অবস্থান করছে।

আল আমিনকে মারধরের পর তার শরীরে ক্ষত দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যায় তাকে বেধড়ক মারধরের কারণে তার চোখ ফুলে গেছে। শরীরের প্রত্যেকটি স্থানে এমনভাবে পেটানো হয়েছে যে ক্ষতগুলো ভেসে উঠেছে। অনেকেই তার শরীরের ক্ষত দেখে বিরুপ মন্তব্য করছেন সেখানে। তার পিঠে মারধরের কারণে পুরো পিঠ ফুলে লাল হয়ে গেছে। হাতে ও পায়েও প্রচুর ক্ষতস্থান রয়েছে।

আহত আল আমিনের বাবা আব্দুস শহিদ জানিয়েছেন, আল আমিন তিনশ টাকা ভাড়ায় গত তিন মাস ধরে আখালিয়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের টমটম (ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা) চালাত। প্রতিদিন তিনশ টাকা ভাড়া দেওয়া তার জন্য কষ্টকর হবে বলে সে জানায়। 

শনিবার বিকেলের দিকে গাড়ি গ্যারেজে বন্ধ করে আসার সময় টমটম মালিক (আব্দুল কুদ্দুসকে) সব কিছু বুঝিয়ে সে তিনশ টাকা ভাড়া দিয়ে টমটম চালাতে অপারগতা জানালে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তী সন্ধ্যায় সে বাসায় আসার পর টমটমের মালিক তাকে ফোন দিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয়। সেখান থেকে একজন ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে জালালাবাদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে।

রোববার (২৩ মে) দুপুরে আব্দুস শহিদ বলেন, এলাকার পঞ্চায়েত বলেছেন বিষয়টি তারা মীমাংসা করে দেবেন। আমি এ স্থানে ভাড়াটিয়া। তাই তাদেরকে টপকিয়ে পুলিশের কাছে যাইনি। কোনো অভিযোগও করিনি।

তবে কিশোর আল-আমিনকে বেঁধে মারধরের ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন টমটমের মালিক আব্দুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, আল-আমিন আমার গাড়ি চালাত। গতকাল একটি ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।

সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন, শনিবার ৯৯৯ কল এলে আমি ঘটনাস্থলে টিম পাঠাই। ওই কিশোরকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবাকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হলে স্থানীয়ভাবে তারা বিষয়টি মীমাংসা করবেন বলে জানিয়েছেন।

তুহিন আহমদ/এমএএস