চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে রাজশাহী মহানগরীতে ভাইবোনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (২৪ মে) বিকেলে রাজশাহীর সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে তাদের গ্রেফতার করে শাহমখদুম থানা পুলিশ।

প্রতারণার অভিযোগ এনে মঙ্গলবার (২৫ মে) নগরীর শাহমখদুম থানায় ওই দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন সাত ভুক্তভোগী। মামলা নম্বর ১০।

অভিযুক্তরা হলেন সুমাইয়া সুলতানা (২৯) ও তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম (৩৯)। তারা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাদের বাবার নাম আশরাফুল আলম চাঁদ। 

পুলিশ বলছে, তারা নয়জনকে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রশিক্ষণের নামে ১৯ মে থেকে রাজশাহীর সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডরমেটরিতে এনে উঠিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতারণা টের পেয়ে নিয়োগপ্রার্থীরা পুলিশকে বিষয়টি জানান। 

সেখান থেকেই তাদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ টাকা, একটি ল্যাপটপ এবং বেশ কিছু নথিপত্র জব্দ করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার।

তিনি বলেন, ওই দুই ভাইবোন নয়জনকে রাজশাহীর নেসকো ও একজনকে একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থায় চাকরির নিয়োগপত্র দেন। তাদের প্রশিক্ষণের নামে টিটিসির ডরমেটরিতে নিয়ে ওঠান। সেখান থেকেই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল। 

কিন্তু প্রশিক্ষণে এসে প্রতারণার বিষয়টি টের পান নিয়োগপ্রাপ্তরা। তারাই পুলিশকে অভিযোগ দেন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই দুই ভাইবোনকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় থানায় সাতজন ভুক্তভোগী মামলা করেছেন। তাদের দাবি, চাকরি দেওয়ার নামে ওই দুজন তাদের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা আদায় করেছেন। এ নিয়ে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

প্রতারক সুমাইয়া সুলতানা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এমএলএসএস পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত ছিলেন। সেখানেই রাজশাহীর কয়েকজেনর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এদেরই একজন রাজশাহী নগরীর পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা নূরে আলম মোসাদ্দেক। অভিযোগকারী সাতজনের একজন তিনি।

এই ভুক্তভোগীর ভাষ্য, তাকে নেসকোতে বিলিং সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপত্রে তার যোগদান দেখানো হয়েছে ৬ জুন। এই পদে তার মাসিক বেতন ধরা হয়েছে ২১ হাজার টাকা। প্রকল্প পরিচালক আরিফুর রহমান স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র তার হাতে তুলে দেন সুমাইয়া।

বিনিময়ে ধাপে ধাপে তার কাছে দেড় লাখ টাকা আদায় করেন তিনি। ট্রেনিংয়ে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে তার সন্দেহ হয়। পরে তিনি নগরীর হেতেমখাঁ এলাকায় নেসকো সদর দফতরে গিয়ে তাকে দেওয়া নিয়োগপত্রটি দেখান। সেখানেই তিনি প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে প্রতারণার শিকার কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের কাছে যান।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর