আতাউর রহমান

নওগাঁ শহরের মুক্তিরমোড় এলাকার ইডেন চায়নিজ রেস্টুরেন্টের শারীরিক প্রতিবন্ধী নৈশপ্রহরী আতাউর রহমান (৪৫) খুন হয়েছে। শনিবার ( ২৯ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল।

নিহত আতাউর গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চকশান্তি গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে নওগাঁ শহরের কোমাইগাড়ী এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। ২০ বছর ধরে এই রেস্টুরেন্টে কাজ করে আসছিলেন তিনি। নিহত আতাউরের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

নিহত আতাউর রহমানের ছেলে রতন হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত শুক্রবার বিকেলে আমার বাবার সঙ্গে শেষ কথা হয় ফোনে। রাতে বাবার সঙ্গে বাদল নামের একজন কর্মচারী ছিলেন, তিনি নাকি এখন নাই। বাবাকে মেরে ফেলার সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকতে পারেন। আমার বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী একজন মানুষ। তিনি সবার সঙ্গে সব সময় হাসিখুশিতে থাকতেন। তার কোনো শত্রু নেই। তবে কে বা কারা বাবাকে খুন করেছে, এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচাই চাই।

নিহত আতাউরের বাবা আহম্মদ মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলের বয়স ৪৫ বছর। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২০ বছর ধরে এখানে কাজ করছে। গতকাল বিকেলে তার শেষ কথা হয় আমার নাতির সঙ্গে। সকালে জানতে পারি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয় পদ্মা বাস কাউন্টারের কর্মচারী মোহন রানা বলেন, আতাউর ভাই খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন। অনেক বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী ইডেন রেস্টুরেন্টে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। সকালে জানতে পারি তাকে কে বা কারা খুন করে হোটেলের তৃতীয় তলায় ফেলে রেখে যায়। এত সহজ-সরল মানুষকে কে মারল নিষ্ঠুরভাবে, আমরা হত্যাকারীর কঠিন শাস্তি চাই।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল ঢাকা পোস্টকে জানান, নিহত আতাউর এবং ওই রেস্টুরেন্টের সহকারী রাঁধুনি বাদল রাতে একসঙ্গে ছিলেন। সকালে প্রধান রাঁধুনি রেস্টুরেন্টে এলে আতাউরের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ রেস্টুরেন্টের তৃতীয় তলা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরজুড়ে খোঁচানোর চিহ্ন পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, হত্যার পর মরদেহটি কাঁথা-বালিস দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ওই রেস্টুরেন্টের রাঁধুনি বাদল পলাতক রয়েছেন। রাজশাহী থেকে সিআইডি ফরেনসিক টিম আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় পরিবারের পক্ষে থেকে কোনো মামলা হয়নি বলে জানান ওসি।

এ বিষয়ে যৌথ মালিকাধীন ইডেন রেস্টুরেন্টের মালিকপক্ষের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমন ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি যৌথ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই। যদিও ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

শামীনূর রহমান/এনএ