কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, স্বাধীনতার পর যেখানে ১ কোটি ১০ লাখ টন চাল উৎপাদন হতো। বর্তমা‌নে সেটি প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৩ কোটি ৮৭ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। সরকারের এখন লক্ষ্য এই অর্জনকে টেকসই করার পাশাপাশি সকলের জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দেওয়া। 

শনিবার (২৯ মে) টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপ‌জেলার মুশুদ্দি রেজিয়া কলেজ থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) আয়োজিত ‘গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালা’ উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী ব‌লেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির ফলে দেশে কৃষি উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের শিক্ষিত তরুণরা নিজের ওপর নির্ভরশীল হতে পারবে। 

তিনি আরও বলেন, কৃষি উন্নয়নে যে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জিত হয়েছে। সেটিকে আমরা সামনে এগিয়ে নিতে চাই। টেকসই করতে চাই। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, চাষযোগ্য জমি হ্রাসসহ নানা কারণে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে প্রয়োজন আরও উন্নত, আরও উৎপাদনশীল জাতের ধান, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাকৃবির শিক্ষক ও গবেষকদেরকে অংশীদার হতে হবে। কার্যকর গবেষণা করে ধান, বিভিন্ন শাকসবজি, ফলমূল, পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। 

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকার গবেষণার ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। আমরা আশা করব, আপনারা গবেষণা করে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলের আরও উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবেন। ধান, শাকসবজি, ফলমূল ও অন্যান্য অর্থকরী ফসল যা বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন। 

কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিতে বিপ্লব এনেছেন। সব রকমের সহযোগিতা দিয়ে কৃষকের পাশে রয়েছেন। তার লক্ষ্য শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই নয়, বরং কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষকের জীবনমান উন্নত করা। 

বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক আবু হাদী নূর আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠা‌নে আরও বক্তব‌্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম, বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, বাউরেসের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক মাহফুজুল হক প্রমুখ।

এ সময় অনলাইনে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষক, গবেষক ও অংশগ্রহণকারী সংযুক্ত ছিলেন। দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় ২০২০ সালে সম্পন্ন হওয়া বাকৃবির বিভিন্ন অনুষদের সর্বমোট ৪৭৭টি গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল উপস্থাপন করা হবে। কর্মশালায় মোট ১৯টি টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে। 

পরে কৃষিমন্ত্রী টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে নিজ গ্রামে মুশুদ্দি রেজিয়া কলেজে কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন করেন। এ সময় ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামছুল আরেফীন, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুপুর সার্কেল) শাহীনা আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর ফারুক আহমাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মুশুদ্দি রেজিয়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেশব চন্দ্র দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অভিজিৎ ঘোষ/আরএআর