ইমাম হোসেন ও মশিউর রহমান

ফেনীর সোনাগাজীতে এক এনজিওকর্মীকে জিম্মি করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগের চার-পাঁচজন কর্মীর বিরুদ্ধে।

মুঠোফোনে নারীকণ্ঠে মো. আইয়ুব খান (২৮) নামে ওই এনজিওকর্মীর সঙ্গে কথা বলে তাকে ডেকে এনে জিম্মি করা হয় এবং তার কাছ থেকে টাকা আদায় করে পিটিয়ে তাকে আহত করা হয়েছে।

ঘটনাটি গত শুক্রবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় সোনাগাজী-কাশ্মীর বাজার সড়কের পৌরসভার চর গনেশ এলাকায় ঘটেছে। তবে বিষয়টি জানাজানি হয়েছে রোববার বিকেলে।

ভুক্তভোগী আইয়ুব খান জানান, জিম্মি করে তার কাছ থেকে ১২ হাজার ৪০০ টাকা, ১টি মুঠোফোনসহ তার সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস ছিনিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ফেলে চলে যায় তারা। বর্তমানে তিনি ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

আইয়ুব খান সাজেদা ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিওর চট্টগ্রামের ভুজপুর শাখার অফিস সহকারী। তার বাড়ি ভুজপুর থানার জজখোলা মহানগর এলাকায়।

এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই ওই এনজিওকর্মী বাদী হয়ে সোনাগাজীর স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান, ফখরুল ইসলাম, আবু বক্কর ছিদ্দিকসহ অজ্ঞতানামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। এরপর রাতেই ইমাম, মশিউর ও ফখরুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, আসামিরা ফেসবুকে নারীর ছবি ব্যবহার করে বিভিন্নজনকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। এরপর তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে মুঠোফোন নম্বর নেন। মুঠোফোনে নারীকণ্ঠে কথা বলে সোনাগাজীতে ডেকে এনে জিম্মি করে টাকা, মুঠোফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে তাড়িয়ে দেন। 

শুক্রবার আইয়ুবের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে। ফোনে কল পেয়ে আইয়ুব আসামিদের বলা জায়গায় গেলে ইমাম, মশিউর, ফখরুল, ছিদ্দিকসহ পাঁচ থেকে ছয়জন তাকে আটক করে বেদম মারপিট করেন। তার কাছ থেকে নগদ টাকা, মুঠোফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন। 

তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ইমাম ও মশিউরকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেন। অন্যরা পালিয়ে যান। পরে আহত অবস্থায় আইয়ুবকে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী বলেন, গ্রেফতার তিনজন ছাত্রলীগের কর্মী। তবে তাদের কোনো পদ-পদবি নেই।

সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা একইভাবে আরও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
শনিবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

হোসাইন আরমান/এমএএস