খুলনার কয়রা উপজেলার দেবাশীষ ব্যানার্জি স্ত্রী নীলিমা ব্যানার্জিকে নিয়ে ভারতের চেন্নাই গিয়েছিলেন কিডনি সমস্যার চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসা শেষে কলকাতার হাইকমিশন থেকে বিশেষ ছাড়পত্র নিয়ে সোমবার বিকেলে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। ইমিগ্রেশন অফিস থেকে বের হয়ে তাদের নেওয়া হবে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে। কিন্তু ক্লান্ত ও ক্ষুধার্থ দম্পতি ইমিগ্রেশন অফিস থেকে ৫০ গজ দূরে খাবার হোটেলে যেতে পারছেন না। নীলিমা ও দেবাশীষ ব্যানার্জির মতো ভারতফেরত যাত্রীদের সমস্যার কথা চিন্তা করে একটি নান্দনিক উদ্যোগ নিয়েছে যশোরের জেলা প্রশাসন। 

যশোর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারতফেরত যাত্রীদের জন্য সোমবার থেকে ইমিগ্রেশনে বিনামূল্যে ফল, পানি ও শুকনো খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশে ফেরা ক্লান্ত যাত্রীরা এমন নান্দনিক আয়োজন দেখে ভীষণ খুশি। এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

নীলিমা ও দেবাশীষ দম্পতি জানান, আমাদের আগে যারা দেশে এসেছেন শুনেছি পানি ও খাবারের সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাদের। ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে পৌঁছাতেই খুব পানির তৃষ্ণা পেয়েছিল। তবে দোকান থেকে কেনা সম্ভব হচ্ছিল না। এবার যশোরের জেলা প্রশাসন নান্দনিক উদ্যোগ নিয়েছে। অপেক্ষারত যাত্রীরা প্রয়োজন অনুসারে টেবিল থেকে খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করছেন। বিষয়টি ভালো লাগল।

জানা গেছে, যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের চলাচলের পাশে সুন্দর একটি স্থানে ঝুড়ির ভেতরে আপেল, কলা, কেক, চকলেট, বিস্কুট সারি সারি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির বোতলও রয়েছে। পাশে একটা প্লেকার্ডে লেখা আছে, অপেক্ষারত যাত্রীরা আপনার প্রয়োজন অনুসারে টেবিল থেকে খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করুন। আয়োজনে-জেলা প্রশাসন, যশোর।

ভারতফেরত যাত্রীরা কোনো মূল্য ছাড়াই সেখান থেকে ইচ্ছেমতো খাবার সংগ্রহ করছেন। যাত্রীরা বলেন, বেনাপোল বন্দরে আমাদের জন্য ফল, পানি ও শুকনো খাবার রাখা দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে। গণমানুষের কথা ভেবে এমন নান্দনিক উদ্যোগ এর আগে আর কখনো বেনাপোল বন্দরে নেওয়া হয়নি। 

ভারত থেকে বেনাপোল দিয়ে দেশে ফেরা পরিমল চক্রবর্তী বলেন, চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে ইমিগ্রেশনে সুন্দর একটা জায়গায় কলা, আপেল, বিস্কুট, পানির বোতল দেখে খুবই ভালো লেগেছে। সেখান থেকে আমরা প্রয়োজন মতো খাবার নিয়েছি। 

সঞ্জয় মুখার্জী নামে আরেক যাত্রী বলেন, ক্লান্ত ও ক্ষুধান্ত মানুষের জন্য বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ফল ও পানি রেখে যশোর জেলা প্রশাসন নান্দনিক উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা সবাই পানি ও ফলের ঝুড়ি থেকে খাবার নিয়েছি। এই আয়োজন যেন অব্যাহত থাকে।

যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, মানুষ অনেক ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরেন। তাদের একটু প্রশান্তি দেওয়ার জন্য ইমিগ্রশনে ফল, শুকনো খাবার ও পানি রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ থেকে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এটা অব্যাহত থাকবে।

জাহিদ হাসান/এসপি