নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর একটি সেতু না থাকায় জামপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো ও নৌকা। শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষায় নৌকা ছাড়া নেই কোনো বিকল্প ব্যবস্থা। ফলে র্দীঘ দিন ধরে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন এসব এলাকার মানুষ।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার জামপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বরুমদী, ঝালোকান্দি, নাগেরকান্দি, কদমতলী, বশিরগাঁও, গোবিন্দপুর, চরপাড়া, লাধুরচর, মুকিমপুর, মহজমপুর, তালতলা, শেখের হাট ও শেখকান্দিসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষের পারাপারের মাধ্যম বাঁশের সাঁকো। এখানে সেতু নির্মাণের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও কোনো কাজে আসেনি। 

যোগাযোগের মাধ্যম নৌকা ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থী, নারী, শিশু, রোগী ও গর্ভবতী নারীদের। আধা ঘণ্টার পথ বাধ্য হয়ে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর আশপাশেই রয়েছে মহজপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বুরুমদী উচ্চ বিদ্যালয়, লাধুরচর ইসলামিয়া মাদরাসা, গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুরুমদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি ঈদগাহ। 

মাদরাসাছাত্র আলী হাসান বলেন, বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হওয়ার সময় পড়ে গিয়ে অনেক ব্যথা পেয়েছি। যদি মাঝখানে পড়তাম তাহলে পানিতে ডুবে হয়ত মারা যেতাম।

স্থানীয় কবি জামান ভূঁইয়া বলেন, এ এলাকায় সবজি চাষ হয় বেশি। এখানকার সবজি দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা পূরণ করে। ব্রহ্মপুত্র নদের লাধুরচর ও ঝালোকান্দি এলাকায় সেতু না থাকায় স্থানীয় সবজি চাষিসহ ব্যবসায়ীরা অনেক আর্থিক লোকসানে পড়ছেন। সরকারের কাছে র্দীঘ দিনের প্রাণের দাবি এখানে যেন দ্রুত একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সজিব রায়হান বলেন, নদী পারাপার হয়ে হাসপাতালে রোগী পৌঁছাতে পৌঁছাতে তাদের অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়ে যায়।

নোয়াগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান জানান, দুইটি ইউনিয়নের মানুষ ওই স্থান দিয়ে চলাচল করে। সেতুটি নির্মাণের জন্য স্থানীয় এমপিকে বলা হয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে জেনেছি।

সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরজুরুল হক বলেন, গত বছর অক্টোবর মাসে সেতুটির প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সেতুর প্রস্তাবটি পাস হলে নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারব।

শেখ ফরিদ/এসপি