ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে হাতে ধরিয়ে দেয় ১০ হাজার টাকা
নারীকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলা হয়েছে
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের এক অসহায় ও হতদরিদ্র বিধবা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের মৃত দানেজ মোল্লার ছেলে মাজেদ মোল্লার (৬৬) বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগীকে থানায় মামলা করতে না দিয়ে তার হাতে ১০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, হতদরিদ্র ওই নারী (৬২) শুক্রবার (১১ জুন) সকালে বাড়ির পাশে ট্রেন রাস্তার উত্তর পাশে জমিতে শাক তুলতে যান। এ সময় মাঠে কাজ করতে থাকা মাজেদ মোল্লা (৬৫) বিধবাকে জোর করে ধর্ষণ করেন। তার চিৎকারে ওই গ্রামের রেজাই হোসেন এগিয়ে এলে ধর্ষক দৌড়ে পালিয়ে যান।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতে রঘুরামপুর গ্রামের আজগর আলীর বাড়িতে মীমাংসার চেষ্টা করে গ্রামের মোড়লরা ব্যর্থ হন। পরদিন শনিবার (১২ জুন) ওই নারী তার দুই আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলা করতে যান। অজ্ঞাত কারণে থানা পুলিশ রাত ১২টা পর্যন্ত থানায় নারীকে বসিয়ে রাখে। পরে দুই পক্ষের সম্মতিতে থানা চত্বর থেকেই নারীকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিধবা নারী বলেন, আমাকে জোর করে পাটক্ষেতে নিয়ে মাজেদ মোল্লা ধর্ষণ করেছেন। এ ঘটনায় তিনি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
এদিকে রোববার (১৩) সকাল থেকেই অসহায় নারীকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্তদের ভয়ে ওই নারী বাড়িছাড়া বলে স্থানীয়রা জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে থানায় উপস্থিত থাকা গ্রাম্য প্রধানরা জানান, নারীকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তাকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী নারীর আত্মীয় আব্দুল সামাদ বলেন, থানায় আমাদের আটকে রাখা হয়। আমরা থানা হেফাজতে বসে থাকি অনেকক্ষণ। পরে এ ঘটনা নিয়ে কোনো অভিযোগ না করার শর্তে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখা হয় আমাদের।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব। তবে আমরা অধিকতর তদন্ত করছি। থানার মধ্যে ১০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
রাকিব হাসনাত/এনএ