স্বাস্থ্যখাতে সংস্কার আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস বাস্তবায়নে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে এই ঘোষণা দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে জনভোগান্তি সৃষ্টি করে কোন আন্দোলন করা হলে তা প্রতিহত করা হবে বলেও জানান। তবে অপরাংশ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য সংস্কার আন্দোলন দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় এই ঘোষণা দেন।

আন্দোলনকর্মী সাব্বির হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পাঠানো প্রতিনিধি দলের এবং মেডিকেলের পরিচালকের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৩০ কার্য দিবস সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিচ্ছি। আশা করছি ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে দাবিগুলো পূরণ করবে। এর ব্যত্যয় হলে আবারও আমরা রাজপথে নেমে আসব।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে করা আন্দোলনে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা সামনের সাড়িতে ছিলাম। দীর্ঘ ১৭ দিন আমরা আন্দোলন চালিয়েছি। এখন সবার মতামতের ভিত্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছি।

সাব্বির হোসেন আরও বলেন, আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রতিনিধি দল এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙিয়েছেন। তারা বরিশালের সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। শিক্ষার্থী ও সুধীজনদের সঙ্গে ফলপ্রসু আলোচনার মাধ্যমে মহাপরিচালক শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাছাড়া শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক দৃশ্যমান কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন। বাকি দাবিগুলো অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করছি। এরপরও আন্দোলনের নামে কেউ জন ভোগান্তি সৃষ্টি করলে আমরা সবাই মিলে তাদের প্রতিহত করব।

আন্দোলন থেকে একাংশের সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে প্রধান সমন্বয়ক মহিউদ্দিন রনি বলেন, যারা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন কিন্তু আমরা এখনো আশ্বস্ত হতে পারিনি। আমাদের আন্দোলন চলবে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সবাই গণঅনশনে যাব। পাশাপাশি ব্লকেড কর্মসূচিও চলবে।

এদিকে হাসপাতালের সামনে আমরন অণশনে অংশ নেওয়া দুই শিক্ষার্থী ইমরান ও তৌকির অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব নিয়ে দুই দফায় ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময়ে মহিউদ্দিন রনিসহ মোট ৮ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর এক দিন পরে বরিশালে আসেন স্বাস্থ্য অদিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি জনভোগান্তি হয় এমন কিছু কেউ করলে তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে