ঠাকুরগাঁওয়ে পৃথক দুর্ঘটনায় এক দিনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে জসিম (৩০) নামে একজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন।

রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ করনাইট নতুন বস্তি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত জসিম উদ্দিন কাশিপুর ইউনিয়নের ভানোর গ্রামের সলেমান আলীর ছেলে।

আহতরা হলেন, মুকতারুল ইসলাম (৩৫), সুলতানা বেগম (২৮), সঞ্জয় রায় (২৫) এবং আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা ঢাকা পোস্টকে জানান, জসিম উদ্দিন, মুক্তারুল ও সুলতানা তাদের শিশু সন্তানকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। অপরদিকে থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহী সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে সবাই ছিটকে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জসিম উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং সঞ্জয় রায়কে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে রেফার্ড করেন।

অন্যদিকে, জেলার রাণীশংকৈল কুলিক নদীর পানিতে ডুবে শায়ন (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুরে ওই উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়নের উত্তরগাঁও গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শায়ন ওই এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা ঢাকা পোস্টকে জানান, বাড়ির পাশে নদীতে জিও ব্যাগ দিয়ে নদীর পাড় বাঁধার কাজ চলছিল। শায়ন সেখানে দেখতে গিয়ে কয়েকজন শিশুসহ গোসল করতে নামে। সবার অগোচরে শায়ন নদীর গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এ ছাড়া, জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন লামিয়া আক্তার (১৫) নামে এক কিশোরী। লামিয়া আক্তার ওই উপজেলার কোষারানীগঞ্জ ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় বাসিন্দারা ঢাকা পোস্টকে জানান, ছয় মাস আগে লামিয়া প্রেমিক বাদলকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। পারিবারিক কলহের জেরে আজ সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা এলাকাবাসীর। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লামিয়ার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় আজাদ (১৬) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কাজীপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত আজাদ সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের বাগেরহাট মিলনপুর গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিক আলীর ছেলে। তার স্বজনরা জানিয়েছেন, সে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী।

স্থানীয় বাসিন্দারা ঢাকা পোস্টকে জানান, পারিবারিক সমস্যার কারণে আজাদ তার মাকে নিয়ে মামার বাড়ি এলাকায় থাকতেন।

চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরোয়ার আলম খান, রাণীশংকৈল থানার ওসি মুহ. আরশেদুল হক এবং পীরগঞ্জ থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম।

তারা জানান, জেলায় আজ পৃথক পৃথক ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রেদওয়ান মিলন/এএমকে