উদ্বোধনের আগেই ভেঙে গেল বিএডিসির ট্যাংক
সেচ ট্যাংক ভেঙে যাওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বিএডিসির নির্মাণাধীন হেজাক ট্যাংক (নদীর পানি তুলে সেচের জন্য জমিয়ে রাখার ট্যাংক) পরীক্ষামূলক যাচাই করার পাঁচ মিনিট পরই ধসে পড়েছে। ট্যাংক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকসহ এলাকাবাসী।
উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের আঙ্গারুলি হাওরে ৫০০ একর বোরো জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের (বিএডিসি) অধীনে নির্মাণ করা হয় হেজাক ট্যাংকটি। ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ট্যাংকটির নির্মাণ কাজ কাজ পায় সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আকিল এন্টারপ্রাইজ।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার ( ৫ জানুয়ারি) বিকেলে রক্তি নদীর পাড়ে হেজাক ট্যাংকটি পরীক্ষামূলকভাবে যাচাই করা হয়। পরীক্ষামূলক যাচাইয়ের পাঁচ মিনিট পরই একটি দেয়াল পানির চাপে ধসে পড়ে যায়। তবে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, এই পানির হেজাক ট্যাংকটি উচ্চতায় ১৪ ফুট ও ৮ ফুট প্রশস্ত ছিল। ৩০ হাজার লিটার পানি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই হেজাক ট্যাংকটি থেকে ২৪টি পানি বের হওয়ার পথ ছিল। পরীক্ষামূলক যাচাইয়ের সময় মাত্র ৩টি পানি বের হওয়ার পথ চালু ছিল। ফলে অতিরিক্ত চাপে ট্যাংকটির একদিকে ভেঙে গেছে।
বিজ্ঞাপন
এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, ট্যাংক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের বালু-পাথর। এ ছাড়া রডের পরিমাণও কম দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
আঙ্গারুলি হাওর সেচ প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক বালিজুড়ি গ্রামের কৃষক মছদ্দর আলী বলেন, ট্যাংক নির্মাণে নিম্নমানের বালু-পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। পানি জমানোর জন্যই ট্যাংক নিমার্ণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত চাপে ভাঙবে কেন? বরং রডের পরিমাণ কম দেওয়ার কারণেই ভেঙে পড়েছে।
বালিজুরি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল ওয়াহিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুব নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে হেজাক ট্যাংকটি উদ্বোধনের আগেই ভেঙে গেছে। যেখানে ৫ সুতার রড ব্যবহারের কথা সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩ সুতার রড ব্যবহার করেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আকিল এন্টারপ্রাইজের মালিক লাভলো আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে হেজাক ট্যাংকটি নিমার্ণ করিনি। সব কিছু ঠিকঠাক দিয়ে কৃষকদের পানি সেচের জন্য তৈরি করেছিলাম। কিন্তু ভেঙে গেছে কেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।
তিনি আরও বলেন, মাত্র ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার কাজে কি আর অনিয়ম করব। আমরা কোনো অনিয়ম করিনি। ভেঙে পড়া দিক আবারও আমরা মেরামত করে দেব।
বিএডিসি সুনামগঞ্জের সহকারী প্রকৌশলী হোসাইন মোহাম্মদ খালিদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আঙ্গারুলি হাওরের বোরো জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য বালিজুড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামের আব্দুল হালিমের বাড়ি সংলগ্ন ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ট্যাংকটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় চাপে ভেঙে পড়েছে। কাজে অনিয়ম হয়ে থাকলে খোঁজ নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব।
এসপি