ছোট ভাইকে বাঁচাতে বড় ভাইয়ের আকুতি
আলমগীর হোসেন
ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে অনার্স শেষ করা আলমগীর হোসেন। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। এতে অনেক টাকার প্রয়োজন।
রোববার (২০ জুন) সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বাঙ্গলীপাড়া এলাকায় আলম হোসেনের বাসায় গেলে এসব তথ্য জানান তিনি। ছোট ভাই আলমগীর হোসনকে বাঁচাতে আর্থিক সহায়তার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
আলম হোসেন ও আলমগীর হোসেন সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বাঙ্গলীপাড়া শহিদুল ইসলামের ছেলে। শহিদুল ইসলাম পেশায় একজন হোটেলের কারিগর। আলম হোসেন পরিবহনশ্রমিকের কাজ করেন।
জানা যায়, ঢাকা থেকে পড়াশোনা শেষ করে করোনার প্রথম দিকে বাসায় ফেরেন আলমগীর হোসেন। এরপর হঠাৎ করেই চলতি মাসের ৩ জুন জন্ডিসে আক্রান্ত হন আলমগীর। পরে পরিবারের স্বজনের মিলে একজন কবিরাজের কাছে ঝাড়ফুঁক করে তাকে সুস্থ করেন। এর কিছুদিন পরেই আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে ৫ জুন ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
বিজ্ঞাপন
কর্তব্যরত চিকিৎসক আলমগীরের একটি ব্লাড টেস্ট করার জন্য বলেন পরিবারকে। কিন্তু সেই পরীক্ষাটি করাতে হলে যেতে হবে রংপুরে। অভাবের সংসারে এটা তাদের জন্য অনেক কষ্টের। অবশেষে মানুষের কাছ থেকে ধার করে টাকা নিয়ে চলে যান রংপুর আমানুল্লাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে ব্লাড পরীক্ষার পরে অবশেষে আলমগীরের ধরা পড়ে ব্লাড ক্যানসার। এতে আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারের মাথায়।
কোনো উপায় না পেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে আলমগীর হোসেনকে ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে হবে। এতে একটি অপারেশ করতে হবে, যার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকার।
আলমগীরের ভাই আলম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করে ছোট ভাইটাকে চিকিৎসা করিয়েছি। কোনোভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেনি সে। চিকিৎসকরা সব রিপোর্ট দেখে বলেছেন ভাইয়ের বোনম্যারো পরিবর্তন করতে হবে। আমরা দিনে আনি দিনে খাই। এত টাকা কোথায় পাব? তাই বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় লাখখানেক টাকা খরচ হয়েছে। চিকিৎসক বলেছেন অনেক টাকার প্রয়োজন। আমাদের পক্ষে তো এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। সেই সঙ্গে আলম হোসেনকে বলেছি তার ভাইয়ের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ একটি আবেদন করতে। যাচাই-বাছাই করে আমরা তাকে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে সাহায্য করব।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাইলে মো. আলম হোসেন (আলমগীরের বড় ভাই) মোবাইল : ০১৩১৮০৫৫৩৪৭, নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।
নাহিদ রেজা/এনএ