সম্প্রতি দেশের অন্যতম প্রধান আম উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁ থেকে আম রফতানি হচ্ছে বিদেশে। ইংল্যান্ডে রপ্তানির উদ্দেশে রোববার (২০ জুন) বিকেলে দ্বিতীয় চালানে নওগাঁর সাপাহার থেকে ১ হাজার ২৪০ কেজি আম্রপালি ঢাকার শ্যামপুরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আজ রাতেই নওগাঁর আমের দ্বিতীয় এই চালান পৌঁছাবে যুক্তরাজ্যে।

১৭ জুন (বৃহস্পতিবার) সাপাহার উপজেলার ‘বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পার্ক’ ও ‘রূপ অ্যাগ্রো ফার্ম’-এর মালিক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা আম্রপালির প্রথম চালানের এক মেট্রিক টন (এক হাজার কেজি) ইংল্যান্ডে পাঠান। বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড ভেজিটেবল এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে তিনি ইংল্যান্ডে এই আম রফতানি করেন।

সম্প্রতি দেশে আম উৎপাদনকারী অন্যতম প্রধান জেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। এ জেলায় উৎপাদিত আমের ৬০ শতাংশই আম্রপালি জাতের আম (বারি আম-৩)। এ জন্য নওগাঁ আম্রপালি আমের জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে। এ জেলার সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলায় আম্রপালি বেশি হয়ে থাকে।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাষিদের মধ্যে সাপাহার উপজেলার গোডাউন পাড়ার তরুণ উদ্যেক্তা সোহেল রানার ১০৭ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা বাগানে দেড় হাজার আম্রপালি জাতের আমগাছ আছে।

সোহেল রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, তার বাগানে এ বছর প্রায় ৫০০ আম্রপালি জাতের গাছের আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন বিদেশে আম রফতানির জন্য। কারণ, রোগবালাইমুক্ত আমই বিদেশে যায়। এরপরও যেসব আম বিদেশে রফতানি করা হবে, সেগুলো ঢাকায় পরীক্ষা করা হয়। ওই পরীক্ষার মাধ্যমে আমে কোনো রোগবালাই বা কীটনাশক আছে কি না, তা নিশ্চিত করা হয়। এরপর তা বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়।

১৭ জুন এক মেট্রিক টন আম্রপালি কোনো ঝামেলা ছাড়াই বিদেশে পাঠাতে পেরেছেন তিনি। দ্বিতীয় চালান নিয়েও ঝামেলা হবে না বলে তিনি মনে করেন। তিনি আশা করছেন, এ বছর আরও প্রায় ১০ মেট্রিক টন আম রফতানি করতে পারবেন। যুক্তরাজ্য ছাড়াও ফিনল্যান্ড, ইতালি ও সুইডেনে আম পাঠানোর জন্য তিনি অর্ডার পেয়েছেন।

সাপাহার উপজেলা আমচাষি সমিতির সভাপতি মোতাহের হোসেন বলেন, নওগাঁর সাপাহারের আম যাচ্ছে বিদেশে। এর চেয়ে আনন্দের কী আছে! সোহেল রানার মাধ্যমে বিদেশে এ অঞ্চল থেকে আম পাঠানো শুরু হলো। আশা করি, তাদের দেখাদেখি ভবিষ্যতে অন্য চাষিরাও বিদেশে আম পাঠাতে উৎসাহী হবেন। বিদেশে আম রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক অর্থ উপার্জনে আমরাও ভূমিকা রাখতে পারব।

সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুজিবর রহমান বলেন, আম চাষের জন্য উপজেলার ১৫ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মৌসুমজুড়েই এই চাষিদের বাগানে আম উৎপাদনের প্রক্রিয়া আমরা দেখভাল করেছি। এই চাষিদের উৎপাদিত ও ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত আম বিদেশে পাঠানোর জন্য উপযুক্ত।

তিনি আরও বলেন, যে আম দেশের বাজারে দুই হাজার টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে, সেই আম রফতানিকারকদের কাছে চার হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন চাষিরা।

এনএ