আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত না হলেও ঝিনাইদহের রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি গত সোমবার (৩ নভেম্বর) সারাদেশে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। ঝিনাইদহের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে শুধু ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর-মহেশপুর) আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি। তবে, বাকি তিন আসনে এখনো কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।

ঝিনাইদহের নেতৃবৃন্দ জানান, বিষয়টি নিয়ে জেলার রাজনীতিতে চলছে নানা আলোচনা। মনোনয়ন না পেলেও বাকি তিন আসনের প্রার্থী হতে এখনো আশা ছাড়েননি নেতারা। মনোনয়ন বঞ্চিতরা এখনো কেন্দ্র ও হাইকমান্ডের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন এবং সমর্থকদের আশ্বস্ত করছেন। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণঅধিকার পরিষদের নেতারা বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন, লিফলেট বিতরণ ও জনমত তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়কে ঝিনাইদহের ভোটাররা পরিবর্তনের সুযোগ হিসেবে দেখছেন এবং তাদের প্রত্যাশা, এবারই দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা পাল্টানোর সময়।

ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) আসনে বিএনপি এখনো কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় আছেন খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি জয়ন্ত কুমার কুন্ডু এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। মো. আসাদুজ্জামান এর আগে জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, পরে বিএনপিতে যোগ দেন। এ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের তেমন দৃশ্যমান কার্যক্রম নেই।

ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুন্ডু) আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও এই আসনে কেন্দ্র কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ, জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট এসএম মশিউর রহমান, ড্যাব নেতা ডা. মো. ইব্রাহীম রহমান রুমি (বাবু), জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর রবিউল ইসলাম লাভলু, জেলা সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা এবং জেলা সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মজিদ বিশ্বাস।

এছাড়া, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর তারেক রেজা এবং গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন এ আসনে অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে জোর আলোচনায় আছেন। ৩ নভেম্বর বিএনপি কাউকে মনোনয়ন না দেওয়ায় জোট প্রার্থী হিসেবে রাশেদকে এ আসন ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা আরও জোরদার হয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মোহাম্মদ আবু বকর এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর-মহেশপুর) আসনে বিএনপি নিজেদের প্রার্থী হিসেবে মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদী হাসানের নাম ঘোষণা করেছে। জামায়াতে ইসলামীর অধ্যক্ষ মতিয়ার রহমান দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে এ আসন থেকে লড়বেন।

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার আংশিক) আসনেও বিএনপি কোনো সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। মনোনয়ন পাওয়ার আশায় আছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম। তবে মুরশিদা জামান বেল্টুর গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবু তালেব এ আসনে লড়বেন।

এসআর/এমজে