বরিশালের গৌরনদীতে ইউপি নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় আরও একজন নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৩ জুন) পরিকল্পিতভাবে তাকে মারধর করা হলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত ব্যক্তির নাম শাহ আলম খান (৬২)। তিনি পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর ভায়রা। এ নিয়ে গৌরনদীতে মোট তিনজন নিহত হলেন। তবে শাহ আলমের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ভ্যানচালকদের বিরোধ মেটাতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে শাহআলম খান আহত হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তবে এখন অনেকেই বলছেন নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার শিকার তিনি। আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করছি। প্রতিবেদন অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, গৌরনদীর খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুই মেম্বার প্রার্থীর সংঘর্ষে বোমা হামলায় বিজয়ী প্রার্থী ফিরোজ মৃধার চাচাতো ভাই মৌজে আলী মৃধা নিহত হয়। নিহতের ছেলে নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় ১০১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে।

বুধবার দুপুরে গৌরনদী বন্দরস্থ আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ও হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে থানার সামনে কর্মসূচির অয়োজন করে নিহত মৌজে আলীর ছেলে নজরুল ইসলম।

কর্মসূচি পালন করে বাড়ি ফেরার পথে বার্থী-কমলাপুর সড়কের শেষ মাথায় দক্ষিণ কমলাপুর গ্রামে পরাজিত প্রার্থী মন্টু হাওলাদারের সমর্থক শাহ আলম খানের বাড়ির সামনে পৌঁছে ফিরোজ মৃধার সমর্থকরা খুনি মন্টু হাওলাদারের ফাঁসি চাই স্লোগান শুরু করে।

এ সময় পরাজিত প্রার্থী মন্টু হাওলাদারের ভায়রা শাহ আলম খানের ওপর হামলা চালায় বিক্ষুব্ধরা। আহত শাহ আলমকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

যদিও স্থানীয়রা দাবি করেছেন, শাহ আলমের ভাগনেদের সঙ্গে বেইলি বিজ্রের সামনে অতিরিক্ত ১৫ টাকা ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে ভ্যানচালকদের হাতাহাতি হয়। মারামারি থামাতে গিয়ে আহত হন শাহ আলম।

এদিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকালে নিশ্চিত করেছেন ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম।

প্রসঙ্গত, গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুরে ইউপি নির্বাচনের দিন সোমবার (২১ জুন) ককটেল হামলায় দুইজন নিহত হন। দুই দিনের ব্যবধানে আরও একজন নিহত হলেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএসআর