কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী। পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীন বাচ্চুর সহযোগী আবু হানিফের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি ভুক্তভোগী ওই নারীর বিচার চাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনাটি সবার নজরে আসে। দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসীর।

ভুক্তভোগী নারী ঢাকা পোস্টকে জানান, চাকরির সুবাদে স্বামী থাকেন ঢাকায়। বিসিএস প্রস্তুতির জন্য কোচিং করতে ছেলেও থাকেন ঢাকায়। মেয়ে থাকেন শ্বশুরবাড়িতে। তাই বেশিরভাগ সময় বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রায় প্রতিদিন রাতেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন বাচ্চু এলাকায় ডাকাত হিসেবে পরিচিত আবু হানিফ নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে বাড়ির গলিপথ দিয়ে গিয়ে নির্জন স্থানে নারী এনে আনন্দ-স্ফূর্তিতে মেতে ওঠেন। তিনি ওই ঘটনার প্রতিবাদ করেন।

তিনি আরও বলেন, পরে একদিন কৌশলে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে হানিফ তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পরও নতুন করে আওয়ামী লীগ নেতা বাচ্চু ও তার ব্যাপারে মুখ খুললে ছেলে-মেয়েসহ তাদের সবাইকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়ে যায় ধর্ষক।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বাচ্চুর নির্দেশে তাকে ধর্ষণ করে আবু হানিফ। আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিচারের জন্য সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিচারের আকুতি জানিয়েও বিচার পাইনি।

ভুক্তভোগী ওই নারীর বিচার চাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন ওই নারীর ছেলে। তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, মায়ের সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে আমি এর বিচার চাই।

অভিযুক্ত জালাল উদ্দীন বাচ্চু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এবারের সম্মেলনে আমি সভাপতি প্রার্থী। তাই আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে একটি মহল এ ষড়যন্ত্র করছে।

পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাফির উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্যাতনের এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারওয়ার জাহান বলেন, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী বা ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসকে রাসেল/এমএসআর