হাড়কাঁপানো শীতে পলিথিন ঘেরা ঘরে দিন কাটছে মা-ছেলের
উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে কুড়িগ্রাম। পৌষ মাসের শুরুতেই গড়ে জেলায় তাপমাত্রার পারদ ১১ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। তীব্র শীতের এই সময়ে কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের জলিল বিড়ির মোড় এলাকার চৌধুরীপাড়া গ্রামের নিয়তি রাণী মহন্ত (৬২) একমাত্র ছেলে সন্তানকে নিয়ে সরকারি জায়গায় পলিথিনে ঘেরা ভাঙা টিনের ঘরে বসবাস করছেন। টিনের ঘরের চারপাশ পলিথিন দিয়ে ঘেরা, কোনোমতে ঠান্ডা ঠেকিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
হিম বাতাস ও ঘন কুয়াশায় পরিবারটি চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। অর্থ সংকটের কারণে শীতের পোশাক কেনা কিংবা ঘরটি মেরামত করা কোনোটাই সম্ভব হচ্ছে না।
বিজ্ঞাপন
নিয়তি রাণী মহন্তর স্বামী নরেশ চন্দ্র দাস প্রায় ১৫ বছর আগে মারা যায়। বর্তমানে তিনি ও তার ছোট ছেলে শ্রী রিপন জলিল বিড়ির কারখানায় বিড়ি বানানোর কাজ করে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয় করে। সেটি দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে তাদের।
নিয়তি রাণী মহন্ত (৬২) বলেন, শীত ও ঠান্ডায় ঘরে থাকা যায় না। প্রায় ১৫ বছর আগে আমার স্বামী মারা যায়। মারা যাওয়ার পর মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এখন ছোট ছেলেকে নিয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছি। কেউ খোঁজ খবর নেয় না। এহনা টিনের ছাপড়া দিয়ে ঘরের চারপাশে পলিথিন দিয়ে আছি। এই শীতে ঘরে থাকাটা মুশকিল হইছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে গেছিলেম একটা বিধবা ভাতা করার জন্য। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। শীত যাচ্ছে এ পর্যন্ত কম্বলও পাই নাই।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় মো. রাসেল মিয়া বলেন, নিয়তি রাণীর স্বামী মারা যাওয়ার পর খুবেই কষ্টে দিন কাটছে তার সরকারি সহযোগিতা পেলে শেষ বয়সে ভালো কাঠতো।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বলেন, আপনার কাছে এই মাত্র শুনলাম। খোঁজ খবর নিয়ে ওই পরিবারকে সহায়তা করা হবে।
টানা কয়েক দিন ধরে সূর্যের দেখা না পাওয়ায় ঠান্ডার তীব্রতা বেড়েছে। এতে খেটে খাওয়া মানুষজন বিপাকে পড়ছে। ঠান্ডার কারণে শ্রমজীবী মানুষের আয় কমে গেছে।
মমিনুল ইসলাম/আরকে