স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন ব্যারিস্টার মওদুদের স্ত্রী
হাসনা জসীমউদ্দীন মওদুদ
নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ–কবিরহাট ও সদরের আংশিক) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলের প্রয়াত স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা জসীমউদ্দীন মওদুদ।
গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্যক্তিগত সহকারী মাহবুবুর রহমান নাহিদের মাধ্যমে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমানের কাছে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন।
বিজ্ঞাপন
হাসনা জসীমউদ্দীন মওদুদ পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের মেয়ে। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে স্বামী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ছেড়ে দেওয়া নোয়াখালী-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। তিনিও একই দিনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী-৫ আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বিএনপি থেকে মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী থেকে মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) থেকে মো. কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী এবং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ থেকে মোহাম্মদ শামছুদ্দোহা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, খেলাফত মজলিস, জনতার দল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), ইনসানিয়াত বিপ্লব ও বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন। পাশাপাশি চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এদিক নিজের ফেসবুক পোস্টে হাসনা জসীমউদ্দীন মওদুদ লেখেন, নোয়াখালী-৫ আসন থেকে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তার স্বামী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এবং তিনি দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এ এলাকার মানুষের সেবা করেছেন। আওয়ামী লীগের ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে ২০১৭ সাল থেকে তিনি নিজ বাড়ি হারিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন।
তিনি আরও লেখেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলীয় মনোনয়নপত্র ছাড়া দলীয়ভাবে মনোনয়ন গ্রহণ করা হবে না। এতে তিনি হতাশ হন এবং বাধ্য হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেন। এ সময় তিনি এলাকাবাসীর সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে রফিকুল ইসলাম নামে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এক স্থানীয় বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াটা রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই দেখছি। এতে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে এবং এলাকায় দলীয় শক্তি দুর্বল হতে পারে। আমরা আশা করব, প্রার্থীগণ পারস্পরিক বৈরিতা না বাড়িয়ে মানুষের সমস্যার প্রতি মনোযোগ দেবেন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নোয়াখালী-৫ আসনে ২১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ১৫ জন। আগামী ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ এবং ২২ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়ে চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।
হাসিব আল আমিন/আরএআর