ভারতীয় সেই তরুণী সেফ হোমে, প্রেমিকসহ কারাগারে ২
মিলন মিয়া ও সহযোগী হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ
প্রেমের টানে ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা ভারতীয় তরুণী প্রীতি পণ্ডিতকে সেফ হোমে রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রীতির প্রেমিক গ্রেফতার মিলন মিয়া ও সহযোগী হাবিবুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৭ জুন) বিকেলে আসামিদের আদালতে নেওয়া হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেন এ নির্দেশ প্রদান করেন।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৬ জুন) বিকেলে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের নূরপুর বালাপাড়া গ্রামের লতিফুল ইসলামের বাড়ি থেকে ভারতীয় ওই তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার প্রেমিক মিলন মিয়া ও সহযোগী হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে মামলা হয়েছে।
রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুষ্কুরিনী ইউনিয়নের পালিচড়া ফাজিলখাঁ নয়াপুকুর গ্রামের মহির উদ্দিনের ছেলে মিলন মিয়া (২৪) ও তার সহযোগী একই গ্রামের বাবলু মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান (২৫)।
১৭ বছর বয়সী প্রীতি পণ্ডিত পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার কোতোয়ালি থানার ভাংত জাংলা গ্রামের মন্টু পণ্ডিতের মেয়ে। পুলিশের দাবি, প্রতারণার মাধ্যমে অপহরণ ও পাচারের উদ্দেশ্যে ওই তরুণীকে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। ২৪ জুন যশোরের বেনাপোল সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে রংপুরে আসে এই ভারতীয় নাগরিক।
বিজ্ঞাপন
প্রীতি পণ্ডিতকে সেফ হোমে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার বাদী সদর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিয়ের নামে অসৎ উদ্দেশ্যে মেয়েটি বাংলাদেশে আনা হয়েছে। পূর্বপরিচিত মিলন ও তার সহযোগী ওই মেয়েকে অপহরণ বা পাচারের উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে দেশে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
এ ঘটনায় মিলন মিয়া, হাবিবুর রহমান ও লতিফুল ইসলামের নামে একটি মামলা হয়েছে। তবে উদ্ধার অভিযানের সময়ে লতিফুল পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পলাতক আসামিকে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের ওই উপপরিদর্শক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আড়াই বছর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিলেন মিলন (২৪) ও তার বন্ধু হাবিবুর (২৫)। সেখানকার হুগলি জেলায় রং-মিস্ত্রির কাজ নিয়েছিলেন তারা। ওই সময়ে মিলনের সঙ্গে প্রীতি পণ্ডিত (১৭) নামের এক ভারতীয় তরুণীর পরিচয় হয়।
একপর্যায়ে তাদের মাঝে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। পরে মিলন ও হাবিবুর দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু থেমে থাকেনি মিলন-প্রীতির যোগাযোগ। দীর্ঘ দুই বছর সম্পর্ক চলার পর অবশেষে প্রেমের টানে প্রীতি পণ্ডিত ছুটে এসেছেন বাংলাদেশের রংপুরে।
সদর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনতাজুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনের ৬, ৭, ৮ ও ১০ ধারায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী এসআই জাহাঙ্গীর আলম উদ্ধার হওয়া ভারতীয় তরুণীকে সেফ হোমে রাখার জন্য আদালতে আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেছেন। মামলায় গ্রেফতার আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রংপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, শনিবার অভিযান চালিয়ে ভারতীয় এক তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশে ওই ভারতীয়কে আসায় উদ্বুদ্ধ করা দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এনএ