লক্ষ্মীপুরে হত্যাচেষ্টা মামলা তুলে নিতে বাদী বিধবা দেলোয়ারা বেগমকে প্রতি রাতে আসামিরা এসে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাকে মারতে বাসায় ঢুকতে না পেরে প্রতি রাতেই কলাপসিবল গেট ও জানালায় ইটপাটকেল ছুড়ে মারে তারা। ব্যবসার কাজে তার ছেলেরা চট্টগ্রাম থাকেন। এতে পূত্রবধূকে নিয়ে ভয়ে দিন কাটে দেলোয়ারার।

রোববার (২৭ জুন) বিকেলে সদর উপজেলা মান্দারী ইউনিয়নের গন্ধর্ব্যপুর গ্রামের ওই নারী সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগী দেলোয়ারা একই গ্রামের চৌকিদার বাড়ির মৃত আবদুস সহিদের স্ত্রী।

মামলা সূত্র জানায়, গত ২৩ মে দেলোয়ারার বাগানের একটি গাছ নিয়ে পার্শ্ববর্তী মোতাহের হোসেনদের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এতে মোতাহেরসহ তার পরিবার দেলোয়ারার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় দেলোয়ারার ছেলে সোহাগ হোসেন ও আজাদ হোসেন সোহেল প্রতিবাদ করেন। পরে মোতাহের স্থানীয় ভাড়াটে লোকজন এনে তাদের ওপর হামলা চালান।

একপর্যায়ে আজাদ হোসনের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় দেলোয়ারা বাদী হয়ে ওই দিন ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টায় মামলা করেন। পরদিন প্রধান আসামি নুর আলম ও মোতাহের হোসেনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। দুদিন পরই মোতাহের আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে আসেন।

এ ঘটনায় অন্য আসামিরা হলেন ফারুক হোসেন, বাহার হোসেন, সাইফুল ইসলাম, কামরুল হোসেন ও বাকিরা অজ্ঞাতনামা।

দেলোয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয়। গ্রেফতারের দুদিন পরই আসামি মোতাহের জামিনে বের হয়ে আসেন। এরপর থেকে আসামিরা দলবল নিয়ে বাড়িতে এসে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। ছেলের বউকে নিয়ে আমি একা বাড়িতে থাকি। কোন দিন কী হয়ে হয়ে যায়, এ নিয়ে আমার ভয়ে দিন কাটে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

দেলোয়ারার মেয়ের স্বামী জিয়াউর রহমান বলেন, হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে আসামিরা আমাদের বিরুদ্ধে আদালাতে মামলা করেছে। ওই মামলায় উল্লেখিত ঘটনাটি পুরোই ভিত্তিহীন। আমাকেও আসামি করা হয়েছে। অথচ ঘটনার দিন আমি উপস্থিতই ছিলাম না। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে ঘটনাটির সঠিক বিচার প্রত্যাশা করছি।

অভিযোগ অস্বীকার করে মোতাহের হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রাম থাকি, বাড়িতে থাকি না। কে বা কারা গিয়ে তাদেরকে হুমকি দেয়, তাও আমি জানি না। আমার লোকজন যায় কি না, তাও আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে চন্দ্রগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলা তুলে নিতে হুমকির ঘটনায় এখনো আমাদের কাছে অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া দেলোয়ারা বেগমের মামলার ঘটনায় মেডিকেল রিপোর্ট এলেই আমরা আদালতে চার্জশিট দাখিল করব। এক আসামি এখনো কারাগারে আছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ