রংপুরে বিধিনিষেধ মানছে না কেউ
অনেকেই পুলিশ দেখে মাস্ক পরলেও বেশির ভাগ লোকজন নিচ্ছে না আমলে
রংপুরে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মানছে না কেউই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। সড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও দৌরাত্ম্য বেড়েছে রিকশা-অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের। পণ্যবাহী যানবাহনের পাশাপাশি থ্রি-হুইলার, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও মিনিবাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। খোলা রয়েছে শপিংমল, মার্কেট ও ছোট-বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
সোমবার (২৮ জুন) সকাল থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত রংপুর নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ করা গেছে। রংপুর জেলা সদর ও মহানগর এলাকা ছাড়াও একই চিত্র অন্য উপজেলাগুলোতেও। কোথাও ঠিকমতো কোনো নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই উদাসীনভাবে চলাফেরা করছে বেশির ভাগ মানুষ।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে সকালে রংপুর নগরের লালবাগ থেকে মেডিকেল মোড় এলাকা পর্যন্ত প্রধান সড়কে বেশির ভাগ দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা গেছে। কিছু শপিংমল ও মার্কেটের দোকান আংশিক খোলা রেখে চলছে বিকিকিনি। রংপুর সিটি বাজার, ধাপ সিটি বাজার, কামাল কাছনা বাজার, শাপলা চত্বর খান বহুমুখী বাজার ও কামারপাড়া বাজারসহ ছোট-বড় বিভিন্ন এলাকার কাঁচাবাজারগুলো মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বেশির ভাগ জায়গাতেই ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা।
বিজ্ঞাপন
তিন দিনের সীমিত লকডাউনের প্রথম দিনে রংপুরে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও তল্লাশি পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে। তবে দায়িত্ব পালনে তাদের মনোভাব ছিল দায়সারা। কিছু সড়কে লকডাউনের পুরোনো চিত্র ফিরিয়ে আনতে সড়কের এক দিক বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধ মানতে মাইকিং করা হচ্ছে। অনেকেই পুলিশ দেখে মাস্ক পরলেও বেশির ভাগ লোকজন নিচ্ছে না আমলে। অফিস, আদালতে মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। স্বাভাবিক ছিল ব্যাংকিং কার্যক্রমও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর মহানগর ও সদর উপজেলা ছাড়াও বদরগঞ্জ, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, পীরগাছা, কাউনিয়া ও মিঠাপুকুর উপজেলার হাটবাজারগুলোতে ব্যবসা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোথাও ব্যবসায়ীরা দোকানের একাংশ খুলে কেনাবেচা করছেন। আবার অনেকে বিভিন্ন অজুহাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখেছেন। এ ছাড়া উপজেলা পর্যায়ে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও গণপরিবহন নেই সড়ক, মহাসড়কগুলোয়। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় লোকের সমাগম ছিল আগের মতোই।
নগরীর সব সড়কেই ছিল অটোরিকশা ও রিকশার দাপট। রিকশার অনেক যাত্রীর মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। অটোরিকশায় যাত্রীদের গাদাগাদি করে চলতে দেখা গেছে। আবার নগরীর বাইরে একটু দূরে যেতে অটোচালকরা ভাড়া নিচ্ছেন বেশি, এমনও অভিযোগ শোনা গেছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মেনহাজুল আলম ঢাকা পোস্টকে জানান, সরকারের ঘোষিত বিধিনিষেধ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে ট্রাফিক কাজ করছে। বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহলের পাশাপাশি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এনএ