শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ

কুষ্টিয়া জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫৫ নমুনা পরীক্ষা করে ১৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩৫৭ এবং মারা গেছেন ১৯৪ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৩৪০ জন।

সোমবার (২৮ জুন) কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসকের অফিস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সিভিল সার্জন অফিস জানায়, নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। নতুন করে শনাক্ত হওয়া ১৭২ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদরের ৯৪ জন, দৌলতপুরের ২৫ জন, কুমারখালীর ১৫ জন, ভেড়ামারার ১৭ জন, মিরপুরের ১৩ জন ও খোকসার ৮ জন রয়েছেন।

মৃত ৯ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ছয়জন ও কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ওয়ার্ডে তিনজন মারা গেছেন।

এ পর্যন্ত জেলায় ৬০ হাজার ৬০৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৫৮ হাজার ৭৫৮ জনের। বাকিরা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায়।

বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮২৮ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১৭৭ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন ১ হাজার ৬৫১ জন।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে কুষ্টিয়া জেলায় এক সপ্তাহের লকডাউন শেষ হয়েছে রোববার রাত ১২টায়। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে কুষ্টিয়া জেলায় চলমান লকডাউন আগামী ১ জুলাই সকাল ছয়টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এ-সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় চলমান লকডাউন আগামী ১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময় ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি দোকান, কাঁচাবাজার ছাড়া বাকি সব ধরনের দোকান, শপিংমল বন্ধ থাকবে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী লকডাউন শুরু হচ্ছে এবং জেলায় করোনার সংক্রমণ না কমায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা, শপিংমল, দোকান, রেস্টুরেন্ট ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকবে।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। সবউপজেলায় হু হু করে বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। সম্প্রতি কুষ্টিয়া পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু পুরো জেলায় কঠোর লকডাউন চলছে। এরপরও কেন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, লকডাউনেও মৃত্যুর মিছিল চলছে, তা নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। করোনার সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাজু আহমেদ/এনএ