হাসপাতালে স্ত্রীর মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী
চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর হাসপাতালে মরদেহ রেখে পালিয়ে যান স্বামী। সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে আছমা বেগমের (৩৫) স্বামী তাজু গাজী মরদেহ রেখে পালান। তবে আছমার পরিবারের দাবি, তাকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে।
পারিবারিকভাবে জানা গেছে, তাজু গাজীর সঙ্গে ২৮ বছর আগে বিয়ে হয় আছমার। বিয়ের পর থেকে তারা সুখে-শান্তিতে বসবাস করে আসছিলেন। তাদের ঘরে ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। আছমা শহরের পুরান বাজার মধ্য শ্রীরামদীতে বসবাস করতেন।
বিজ্ঞাপন
নিহত আছমা বেগমের ভাই মো. রাজু মিজি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বোনজামাই তাজু গাজী দুই-তিন বছর হলো আরেকটি বিয়ে করেন। এ নিয়ে আমার বোনের সঙ্গে শুরু হয় অশান্তি। আমার বোনকে বেশ কয়েকবার মারধর করেছেন তাজু। তখন নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছিলেন আমার বোন।
স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার সালিস হয়েছে। সালিসে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তাজু গাজী আমার বোন আছমা বেগমের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। কিছুদিন যেতে না যেতে তাজু আবারও দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে নতুন বাজার বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। দুদিন আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে আনবেন বলে ঝগড়া করে বড় ছেলে তুষার ও ছোট ছেলে টিপুকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তাজু গাজী।─ মো. রাজু মিজি
তিনি বলেন, সোমবার সকালে খবর পাই আমার বোন অসুস্থ। বাড়িতে গিয়ে আমার বোনকে নিয়ে প্রথমে প্রিমিয়াম হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
বিজ্ঞাপন
আছমা বেগমের মেয়ে তামান্না ঢাকা পোস্টকে জানায়, রোববার রাতে আব্বা মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেন। আমরা কেউ ভয়ে কাছে যাইনি।
ছোট ছেলে মো. টিপু বলেন, আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আমাদের শান্তির ঘরে অশান্তি শুরু হতে থাকে। আমাদের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়েছেন বললেন। এখন আবার নতুন বাজার বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. নূর হোসাইন বান্না জানান, সোমবার দুপুর ১টায় আছমা বেগম নামের একজনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। পরিবারের লোকজন ধারণা করছেন, তাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে।
চাঁদপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাছির উদ্দিন বলেন, মরদেহ সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
শরীফুল ইসলাম/এনএ