আকিজ বিড়ি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা গাছের গুড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করেছে
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পুলিশ ও আকিজ বিড়ি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। শনিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার হোসেনাবাদে আকিজ বিড়ি কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শিপুল ইসলাম নামে একজন গুলিবিদ্ধ ও পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিক্ষুব্ধ বিড়ি শ্রমিকরা। তবে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ওসি জহুরুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা জানান, শনিবার ( ৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে আকিজ বিড়ি কারখানার শ্রমিকদের প্রবেশের নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর কয়েকজন শ্রমিক প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। দেরিতে আসায় কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে শ্রমিকদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিপেটা শুরু করে এবং পরে ফাঁকা গুলি ছুঁড়েন। এতে শিপুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় আকিজ বিড়ি কারখানার সব শ্রমিক কাজ বন্ধ করে হোসেনাবাদ বাজারে কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়ক অবরোধ করে। পরে তাদের সঙ্গে উপজেলার ফিলিপনগর কারখানার বিড়ি শ্রমিকেরাও যোগ দেন।
বিজ্ঞাপন
বিড়ি শ্রমিকরা বলেন, পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে শিপুল ইসলাম নামে এক শ্রমিক আহত হয়েছেন। তিনি এখনও কারখানার ভেতরেই আছেন। পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অভিযোগ তুলে বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুলিশ শ্রমিকদের ওপর লাঠিপেটা করে এবং গুলি ছুঁড়ে। আমাদের একজনের গুলি লেগেছে। অনেকে আহত হয়েছেন। অবিলম্বে আমরা তাদের বিচারের দাবি করছি।
ঘটনার পর কুষ্টিয়া-দৌলতপুর-মহিষকুণ্ডি আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। গাছের গুঁড়ি দিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দেন। সড়কের ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে আকিজ বিড়ি কারখানার ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, কয়েকজন বিড়ি শ্রমিক দেরিতে অফিসে আসে। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের বাধা দেয়। এতে তারা নিরাপত্তা কর্মীদের ওপর চড়াও হয় এবং কথা কাটাকাটি শুরু হয়। পরে শ্রমিকরা কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশে খবর দিলে দ্রুত পুলিশ চলে আসে এবং ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষুব্ধ বিড়ি শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল মারতে শুরু করে। এতে আত্মরক্ষার্থে চার বাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পুীলশ। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। সড়ক অবরোধকারী শ্রমিকদের দুপুর ১২টায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওসি জহিরুল ইসলাম গুলিবিদ্ধের কথা অস্বীকার করে বলেন, এই ঘটনায় কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি। লাঠিপেটায় কেউ হয়তো আহত হতে পারে।
এসপি