রাজশাহী নগরীতে জমিজমা নিয়ে বিরোধে দুপক্ষের সংঘর্ষে সাবেক বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম শফিকসহ দুজন খুন হয়েছেন। বুধবার (৩০ জুন) দুপুরের দিকে নগরীর রাজপাড়া দাশপুকুর বৌবাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

নিহত শফিকুল ইসলাম (৪৫) নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। শফিকুল ইসলাম নগরীর দাশপুকুর এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম সাজদার রহমান। 

তিনি নিলয় ট্রেডার্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। জমি কেনাবেচায়ও জড়িত ছিলেন শফিকুল। চড়া সুদে এলাকায় দাদন ব্যবসাও করতেন তিনি।

নিহত অন্যজন হলেন নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব আলীর ছেলে জয়নাল আবেদিন (৪৫)। জয়নাল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেনের ভাতিজা।

এই ঘটনায় নারীসহ দুপক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে চারজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা মাহতাব আলী (৬০), কাউন্সিলর কামাল হোসেনের স্ত্রী সালমা বেগম (৪০), মনসুর আলীর ছেলে সোহেল (৩২), লুৎফর রহমানের ছেলে সোহাগ (৩২)।

স্থানীয়রা বলছেন, বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলামের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মাহতাব আলীর বিরোধ চলে আসছিল।

তাছাড়া সম্প্রতি অস্ত্র নাড়াচাড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতা মাহাতাব আলীর ছেলে সেলিম মুর্শেদ ওরফে শাফিন এবং ভাতিজা রানা হোসেন (৩২) গ্রেফতার হন। গোপনে সেই ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন নিহত শফিকুল ইসলামের ছেলে নিলয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক নিলয়।

পুলিশ বলছে, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দুপুরের দিকে বিরোধপূর্ণ জমিতে বেড়া দিতে গিয়েছিলেন শফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন। বাধা দেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মাহতাব আলী ও তার স্বজনদের ওপর হামলা চালান শফিকুল ইসলাম ও তার তার লোকজন।

পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে আহত হন দুপক্ষের কয়েকজন। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান শফিকুল এবং প্রতিপক্ষের জয়নাল। আহত অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় এরইমধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর