ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার তিনটি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক কৃষকের বাদাম মধুমতি নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। এর ফলে তাদের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবেও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

উপজেলার বুরাইচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা ও টিকোরপাড়া, গোপালপুর ইউনিয়নের চরমাকরাইল এবং বানা ইউনিয়নের রুদ্রবানা ও বেলবানা গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে নদীতে পানি বাড়ছে। এতে নদীপাড়ের বাদামখেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এর ফলে দেড় শতাধিক কৃষকের স্বপ্নও ভেসে গেছে।

রুদ্রবানা গ্রামের কৃষক এনামুল হাজি (৪১) জানান, পানি বাড়তে থাকায় তারা খেত থেকে বাদাম কাটতে শুরু করেন। কিন্তু দ্রুত পানি বাড়তে থাকায় বেশির ভাগ বাদাম গাছ খেতে রয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, তারা চার ভাই ৩০ শতাংশ জমিতে বাদামের চাষ করেছিল। এ জন্য জমি চাষ ও বীজ রোপণসহ তাদের ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ জমিতে ৬ মণ বাদাম উৎপাদন হতো। প্রতি মণ বাদাম চার হাজার টাকা করে বিক্রি করা গেলে তাদের আয় হতো ২৪ হাজার টাকা। এ থেকে খরচ বাদ দিলে তাদের অন্তত ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকত।

বেলবানা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোহাম্মদ আলী (৪১) বলেন, পানি বাড়ার শুরুর দিন বাদাম কাটতে শুরু করি। সেদিন পানি ছিল হাটু পর্যন্ত, পরের দিন হয়ে যায় মাজা পানি। ফলে বাদাম তোলা সম্ভব হয়নি।

চর মাকরাইল গ্রামের কৃষক মো. কুদ্দুস মিয়া (৫২) বলেন, তার তিন একর জমির বাদাম তলিয়ে গেছে। তিনি কোনো বাদামই তুলতে পারেননি। এর ফলে তিনি অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নদীপাড়ের ওই এলাকার বাসিন্দারা সাধারণত পাট ও বাদাম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। নদীর ওপরের অংশে পাট রোপণ করেন এবং নিচের অংশে চাষ করেন বাদাম। পানিতে বাদাম ডুবে যাওয়ায় এ বছর তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আলফাডাঙ্গা উপজেলায় এ বছর ১৫০ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে দুই টন করে আবাদ হলে এ বছর এ উপজেলায় তিনশ টন বাদাম উৎপাদন হওয়ার কথা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপন প্রসাদ সাহা বলেন, মধুমতি নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বাদাম তলিয়ে গেছে। ওই সকল ইউনিয়নের কৃষি কর্মীদের এ ব্যাপারে তথ্য নিয়ে জানাতে বলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনগুলো পাওয়া গেলে আর্থিক ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা সম্ভব হবে।

এসপি