ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা

রাজশাহীর চারঘাটে গ্রাম্য সালিশে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে রেজাউল করিম (৩৫) নামের এক ভ্যানচালক মারা গেছেন। শনিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর ৩টার দিকে জেলার চারঘাট ও পুঠিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী শিশুতলা-বটতলা এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়।

নিহত ভ্যানচালক রেজাউল করিম চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের গ্রামশিবপুর এলাকার হালিম উদ্দিনের ছেলে। মুমূর্ষু অবস্থায় শনিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে মরদেহ রামেক হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়।

এই ঘটনায় অন্তত ৮ জন যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সংঘাত এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুঠিয়ার বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুলতান আলী বলেন, পুঠিয়ার দীঘলকান্দি ও চারঘাটের গ্রামশিবপুরের লোকজন মাঝে মধ্যেই ঝগড়া-বিবাদ লিপ্ত হতেন। সম্প্রতি তুচ্ছ ঘটনা নিয়েও দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মারপিটের ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি মীমাংসায় শনিবার জোহর নামাযের পর দুই গ্রামের মাঝামাঝি শিশুতলা-বটতলা এলাকায় লোকজনকে নিয়ে সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু ও চারঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুঠিয়া সার্কেল) আবুল কালাম সাহিদ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চারঘাট) মো. নুরে আলমসহ পুঠিয়া ও চারঘাট থানার শীর্ষ কর্তারাও।

চারঘাটের শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, তিনি জরুরি কাজে রাজশাহীতে ছিলেন। এখান থেকেই এলাকায় সংঘাতের খবর পান।

এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বিরোধ মেটাতে সালিশ আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সালিশ চলাকালে দীঘলকান্দি গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র হাতে গ্রামশিবপুর এলাকার লোকদের ওপর হামলা চালান। এতে আবারও শুরু হয় সংঘর্ষ। সংঘর্ষে গ্রামশিবপুরের বাসিন্দা রেজাউল মারা যান। আহত হন আরও কয়েকজন। এরপর সালিশ বন্ধ হয়ে যায়।

চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ দীঘলকান্দি গ্রামের সবুজ আলী ও আবু শামাকে আটক করা হয়েছে। পরে আরও ৬ জনকে আটক করে পুলিশ।

ওসি আরও বলেন, কয়েকদিন ধরেই তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দুগ্রামবাসীর ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটছিল। আমরা দুপক্ষকে নিয়ে সমঝোতায় বসেছিলাম। এরই মধ্যে আবারও সংঘর্ষ বাঁধে। এতে কয়েকজন আহত হন। তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের মৃত্যুর খবর তিনি পেয়েছেন।

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যেহেতু সংঘর্ষের স্থান চারঘাট থানা এলাকার মধ্যে, তাই পুরো বিষয়টি তারা তদারকি করছেন। আমরা চারঘাট থানা পুলিশকে সহায়তা করছি। 

এমএসআর