ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহেল রানার দুটি কিডনিই অকেজো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল রানা। তার দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে। অর্থের অভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে পারছেন না তিনি।

সোহেল রানার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে। তিনি দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান। সোহেল বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) উত্তীর্ণ হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করতে চায়।

২০১৬ সালে তার কিডনি জটিলতা ধরা পড়ে। তখন থেকেই তার পরিবার চিকিৎসার খরচ চালিয়েছেন। ছেলের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে সবকিছু হারিয়েছেন পরিবার। এখন তার চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছেন না পরিবার। 

চিকিৎসক বলেছেন, দ্রুত সোহেলের কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে হবে। ইতোমধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ডোনারের সঙ্গে তার কিডনি ম্যাচিং হয়েছে। তাই অতিদ্রুত ভারতে কিডনি অপারেশন করাতে চান সোহেল। এ জন্য প্রায় ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন। তার পরিবারের পক্ষে এই খরচ বহন করা সম্ভব না। 

সোহেল রানা বলেন, আমি একটি নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমার বাবা বিলে মাছ ধরে সংসার চালান। ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় এবং আমিই আমার গ্রামে সর্বপ্রথম জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী। আমার সব বন্ধুই গ্রামের বাইরে লেখাপড়া করতে যায়। কিন্তু আমি গ্রামেই থেকে যাই। কারণ, আমার পরিবারের সাধ্য ছিল না বাইরে লেখাপড়া করার মতো ব্যয়ভার বহন করার। 

এসএসসি পাসের পর হরিণাকুণ্ডু সরকারি লালন শাহ কলেজে ভর্তি হয়। ২০১৩ সালে কলেজে সর্বোচ্চ রেজাল্ট জিপিএ ৪.৯০ পাই। ওই সময় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার প্রবল ইচ্ছা জাগল। বাবাকে কোনোমতে রাজি করিয়ে ঝিনাইদহে কোচিং করার জন্য যাই। সেখানেও কোচিংয়ের স্যারদের সহায়তায় প্রথমবারেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (আইন ও ইংরেজি) চান্স পাই।

পরিবারের ইচ্ছাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হই। টিউশনি করে সবকিছু ভালোভাবেই চলছিল। তবে দ্বিতীয়বর্ষ শেষ হতেই আমার জীবনে নেমে আসে অশনিসংকেত। ডাক্তার বলে আমার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। জীবনের সব চেষ্টা যেন বৃথা হয়ে গেল।

সোহেল আরও বলেন, স্বপ্ন ছিল অন্তত বিসিএসের ভাইভা বোর্ড পর্যন্ত যাওয়ার। কিন্তু জীবনে চলে আসল মরণব্যাধি ডায়ালাইসিস—  যা আর শেষ হল না। শেষ হল একটা জীবনের স্বপ্ন এবং সর্বস্বান্ত হল আমার পরিবার। এখন আমি পরিবারের নিকৃষ্ট সদস্য। আমার জন্য আমার পরিবার এখন ধ্বংসের পথে প্রায়।

পরিবার স্বপ্ন দেখত আমি পরিবারের হাল ধরব। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে কিডনি জটিলতায় আমার ও পরিবারের স্বপ্ন এখন মৃত প্রায়। আমিও জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। অসুস্থতার শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত অনেকের উৎসাহে আমার বাঁচার স্বপ্নটা অনেক বড় হয়ে গেছে। সকলের সাহায্য-সহযোগিতায় আমি এই সুন্দর পৃথিবীতে আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই। এই মুহূর্তে ২০ লাখ টাকা জোগাড় করা আমার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ আমি বাঁচতে চাই, আমাকে সহযোগিতা করুন।

সোহেলের সঙ্গে কথা বলতে ও সহযোগিতার হাত বাড়াতে নিম্নোক্ত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করুন।

০১৭৪৩৭০০৫৪৭ (সোহেল রানা), ০১৭৪৩৭০০৫৪৭ (বিকাশ), ০১৭৪৩৭০০৫৪৭৮ (রকেট), ০১৯১৫৫১৯৪৮৭ (নগদ), ডাচ বাংলা ব্যাংক: ৭০১৭০১৫৪৮৫৪৯৫ (এজেন্ট ব্যাংকিং), সোনালী ব্যাংক: ২৪০৫৯০১০১২৯৩২ হরিণাকুণ্ডু, ঝিনাইদহ।

এমএসআর