মৌলভীবাজার জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলছে। ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৪ জুলাই) সকালে সিলেটের উইমেন্স হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রবাসী সুমন আহমদ মারা যান।

এর আগে শনিবার কুলাউড়ার উত্তর কুলাউড়া ও জয়চন্ডী ইউনিয়নে দুজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা দুজনেই মৌলভীবাজার ও সিলেটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

জানা যায়, কুলাউড়ার হোসেনপুর গ্রামের আকল মিয়ার ছেলে কাতারপ্রবাসী সুমন আহমদ ১৮ দিন থেকে জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত ছিলেন। স্বাভাবিক সময়ের মতো তিনি স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে ওষুধ সেবন করেন।

জ্বর না কমায় স্থানীয় এক চিকিৎসক তাকে নিউমোনিয়ায় রোগে আক্রান্ত হয়েছেন মনে করে ওষুধ দেন আরও ৭ দিনের। কিন্তু জ্বর না কমায় একপর্যায়ে তিনি কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন কুলাউড়া সরকারি হাসপাতালে।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২৫ জুন মৌলভীবাজারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন। এরই মধ্যে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পরদিন তাকে নেওয়া হয় সিলেটের উইমেন্স হাসপাতালের করোনা ইউনিটে।

অক্সিজেন লেবেল কমে যাওয়ায় উইমেন্স হাসপাতালের আইসিইউ বেডে লাইফ সাপোর্ট নিয়ে গত এক সপ্তাহ করোনার সঙ্গে লড়াই করেন সুমন মৃত্যুবরণ করেন।

সুমনের বন্ধু মোক্তাদিরুল ইসলাম তুহিন জানান, গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে দেশে এসে আর ফিরে যেতে পারেনি। যখন প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক তখন সে করোনায় আক্রান্ত হলো। আমাদের ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছে বন্ধু। 

অপরদিকে কুলাউড়া পৌরসভার উত্তর কুলাউড়ার বাসিন্দা হারিছ খাঁন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৪ দিন পূর্বে মৌলভীবাজার আল হামরা হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ জুলাই সকালে তিনি মারা যান।

এছাড়া মেম্বার লৈয়ারহাই গ্রামের বাসিন্দা আজিজ উদ্দিনের স্ত্রী হেনা করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১ জুলাই সিলেটের নুরজাহান হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুলাউড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার।

সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, ২৪ ঘণ্টায় ৮৯ নমুনা পরীক্ষায় ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের হার ২৯ শতাংশ। অ্যান্টিজেন টেস্টে ৪৪ নমুনায় ২১ জনের পজিটিভ আসে। এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১২১ জন শনাক্ত হন। সুস্থ হন ২ হাজার ৭১৮ জন।

ওমর ফারুক নাঈম/এমএসআর