সারাদেশের মতো পটুয়াখালীতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সোমবার (০৫ জুলাই) সকালে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করাতে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। তবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কোনো রোগী ভর্তি হননি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন সেবিকা বলেন, নমুনা পরীক্ষার পর কারও করোনা শনাক্ত হলে তাকে প্রথমে হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। অক্সিজেন লেভেল নিচে নামলেই রোগীকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। 

আরেক সেবিকা বলেন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ কম থাকার মূল কারণ এখানে আইসিইউ শয্যা নেই। সংকটপন্ন রোগী এলেই সঙ্গে সঙ্গে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রোগীর স্বজন সাদ্দাম হোসেন বলেন, গতকাল বিকেলে মায়ের অক্সিজেন লেভেল নিচে নেমে যায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। হাসপাতালে ভর্তি করার সঙ্গে সঙ্গে মাকে নার্সরা অনেক যত্ন সহকারে ওর্য়াডে নিয়ে যান। মাকে তারা অনেক সেবা করছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ঋণ শোধ করতে পারবো না।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন করে একজন করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। সবমিলিয়ে হাসপাতালে আটজন করোনা রোগী ভর্তি আছেন।  হাসপাতালের করোনা ইউনিটের শয্যা মোট ৮০টি। এখানে ২৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রয়েছে। আরও ১০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো আইসিইউ শয্যা নেই। আইসিইউ ইকুইপমেন্ট থাকলেও দক্ষ জনবলের অভাবে তা এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি।              

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ৪৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৮৩ জন। এ পর্যন্ত পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২ হাজার ৩২৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৯৮ জন। যার মধ্যে হাসপাতালে আটজন এবং হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১৯১ জন। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।   

সকালে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. আতিকুর রহমান জানান, আজ এখনও করোনা ইউনিটে যাইনি। গেলে সর্বশেষটা বলা যাবে। 

তিনি বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আক্রমণ যদি শুরু হয় তাহলে করোনা নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যাবে। আগামী দিনে কী হবে বলা যায় না।

আরএআর