বউ নিয়ে অন্তত লঞ্চের কেবিনে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল নববিবাহিত রাসেলের

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বলতে আকদ পর্যন্ত হয়েছে। লকডাউনের কারণে আর আতিথেয়তার সম্ভব হয়নি। ছুটতে হয়েছে কর্মস্থলের জন্য। নতুন বউ নিয়ে অন্তত লঞ্চের কেবিনে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল রাসেলের। তাও হলো না।

অস্বাভাবিক যাত্রীর চাপে শেষে লঞ্চের ছাদেই ঠাঁই হয়েছে নবদম্পতির। বরিশাল নদীবন্দরে কথা হয় নববিবাহিত রাসেলের বোন পারভিনের সঙ্গে। জেলার উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নে তাদের বাড়ি।

পারভিন জানান, ‘বিয়ের কথাবার্তা ঠিক ছিল গত ঈদুল ফিতরে। কিন্ত তখন লকডাউন পড়বে দেখে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি। এরপর উভয় পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় কোরবানির ঈদে। আমরা ভেবেছিলাম আগের ১৪ দিন লকডাউন দেওয়ায় কোরবানির পর লকডাউন দেবে না।’

লঞ্চের ছাদে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে আছেন নববধূ

তিনি আরও বলেন, ‘এজন্য ঈদের পরের দিন বিয়ের আয়োজন করা হয়। গতকালও জানতাম না ২৩ জুলাই থেকে আবার লকডাউন দেবে। আজ দুপুরে শুনেছি তখন কেবল আকদ হয়েছে। আয়োজন ছিল খাবারের। কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পরপরই খাওয়া-দাওয়া না করেই বউ নিয়ে ঢাকা রওনা দিয়েছি। যেতে কষ্ট হবে। কিন্তু কিছু করার নেই।’

রাসেল ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যানের কাজ করেন। নববধূর বাড়ি পাশের ইউনিয়নে বললেও নাম বলেননি রাসেল। নববিবাহিত রাসেল বলেন, ‘চেষ্টা করতেছি লঞ্চে একটি কেবিন সংগ্রহ করার। কিন্তু পাচ্ছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন বউ নিয়ে এভাবে খোলা আকাশের নিচে যেতে কেমন দেখায়। আর একটা দিন পরে লকডাউন দিলে আর সমস্যা হতো না। না পারলাম কোরবানির মাংস খেতে, না পারলাম বিয়েটা করতে!’

জানা যায়, রাত ৮টায় লঞ্চটি ছেড়েছে ঢাকার উদ্দেশে। ঢাকায় পৌঁছাবে ভোরের দিকে। এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা লঞ্চে ওঠে। বৃহস্পতিবার বরিশাল নদী বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ১০টি বিলাসবহুল লঞ্চ ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে পারাবত-১০ লঞ্চের যাত্রী নবদম্পতি।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএসআর