ছেলেদের সঙ্গে ময়েন উদ্দিন

৬ সন্তানের জনক ৬৫ বছরের ময়েন উদ্দিন। এর মধ্যে ছেলেসন্তানই ৫ জন। ১০ কাঠা সম্পত্তি স্ত্রী ও ছেলেদের নামে লিখে না দেওয়ায় বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয় তাকে। ফেসবুকে ক্ষুদেবার্তা পেয়ে পাবনার এসপি মো. মহিবুল ইসলাম খানের নির্দেশে বৃদ্ধকে উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।

বৃদ্ধ ভ্যানচালক ময়েন উদ্দিন পাবনা সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়নের শানিকদিয়ার গ্রামের মৃত বয়েন উদ্দিনের ছেলে। থানা সূত্রে জানা যায়, ভ্যানচালক ময়েন উদ্দিনের এক পুত্র মালয়েশিয়ায় থাকে। বাকি সন্তানরা বাড়িতেই থাকেন।

২৫ বছর পূর্বে তিনি পাবনা সদরের বাংলাবাজার এলাকা থেকে হিমায়েতপুর এলাকায় ১০ কাঠা জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণের পর সেখানেই বসবাস করছিলেন। ঠিক তখন থেকেই স্ত্রী ও তার পুত্ররা বৃদ্ধের নামের জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।

তিনি জমি লিখে দিতে না চাইলে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় তাকে। এর পর সারাদিন ভ্যান চালিয়ে রাতে একটি দোকানের সামনে রাত কাটাতে থাকেন তিনি।

বুধবার (১১ আগস্ট) রাতে এ ধরনের একটি খবর জেলা পুলিশ পাবনার ফেসবুকে ক্ষুদেবার্তা আসে। মেসেজ দেখে পাবনার এসপি মো. মহিবুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা জানতে সদর থানাকে দায়িত্ব দেন।

পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ডেভিড ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্তে সত্যতা পান এবং সেই রাতেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনার পর বৃদ্ধের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী ও পুত্রগণ পুলিশকে লক্ষ্য করে মারমুখী আচরণ শুরু করে। কিন্তু তাদের শান্তভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে পুলিশ সদস্যরা যখন ব্যর্থ হয়, তখন বৃদ্ধের পুত্র তিনজনকে আটক করা হয়।

পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বৃদ্ধকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে ছেলেদের বুঝিয়ে দেন। ছেলেরা তাদের বাবাকে সবরকম দেখাশোনা করবে মর্মে অঙ্গীকার করেন।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এসপি স্যারের নির্দেশনা পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার সব জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে নিজের বাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়া বৃদ্ধকে পুনরায় বাড়িতে ওঠানোর ব্যবস্থা করি।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানান, জনসেবায় অহর্নিশ পুলিশ। পুলিশি জনসেবা মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ শুধু জনগণের জানমাল নিরাপত্তা দেবে না। সমাজের সব ধরনের মানবিক কর্মকাণ্ডের পাশে আছে, থাকবে।

রাকিব হাসনাত/এমএসআর