স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র (আসন সংখ্যার শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে) খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার।  বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

তবে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র আগামী ১৯ আগস্ট খোলার বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানিয়েছেন বন বিভাগ। ফলে সুন্দরবনে প্রবেশে পর্যটকদের অপেক্ষা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।  

এদিকে সুন্দরবনের পর্যটন খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পাননি ট্যুর অপারেটররাও। আগামী ১৬ আগস্ট বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন।  

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আযম ডেভিড বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এর মাঝে অবশ্য কয়েক মাস খোলা ছিল। পরবর্তীতে এপ্রিলে ফের বন্ধ হয়ে যায়। যা এখনো বন্ধ রয়েছে। আগামী ১৯ আগস্ট দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হচ্ছে। অথচ সুন্দরবন খুলবে কি না সে বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। আগামী ১৬ আগস্ট ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের পক্ষ থেকে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
 
তিনি বলেন, সংগঠনের তালিকাভুক্ত ৬৩টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব মিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। আর্থিক সংকটে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী কমিয়েছে। অনেকেই বেকার হয়েছে।
 
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্র খুললেও সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র ১৯ আগস্ট খুলছে না। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে সকল প্রকাশ মৎস্য ও কাকড়া শিকার বন্ধ রাখার ঘোষণা রয়েছে আগে থেকেই। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রও পড়ছে। ফলে ১ সেপ্টেম্বরের আগে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র খোলার সম্ভাবনা নেই।  

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সাধারণত জুলাই-আগস্ট মাছের প্রজনন মৌসুম। তবে এবার জুন মাস থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মৎস্য শিকার ও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর থেকে মৎস্য শিকারের জন্য পাশ পারমিট দেওয়া হবে। তবে পর্যটন কেন্দ্র খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
 
খুলনা আঞ্চলিক বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে সুন্দরবন খোলার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পায়নি। সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ হয়েছিল পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায়। যেহেতু আমরা নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আওতায় রয়েছি, আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। সুন্দরবনের ক্ষেত্রে আগামী ১৯ আগস্ট খোলার সম্ভাবনা নেই। সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের সময় আরও বাড়তে পারে। তবে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত এলে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে।
 
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছর ১৯ মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৭ মাস সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে খুলে দেওয়া হয়। ফের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে চলতি বছরের ৩ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বনবিভাগ। করোনা সংক্রমণরোধে তা বাড়ানো হয়। এখনো বন্ধ রয়েছে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র। 

এসপি