মেঘনা আমার ঘর খেয়ে ফেলছে। বসতভিটে না থাকায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অবশেষে স্কুলের বারান্দায় ঠাঁই নেই। শনিবার (১৪ আগস্ট) সকালে জেলা প্রশাসক স্যার আমাদের সরকারি ঘর দিয়েছেন। আমার মতো অসহায় মানুষের দিকে তিনি তাকিয়েছেন। আমি স্যারের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। এভাবেই মনের কথাগুলো অকপটে ঢাকা পোস্টকে বলছিলেন মেঘনাগর্ভে ঘরবাড়ি বিলীন আনোয়ার হোসেন। 

নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীর গর্ভে বসতভিটা বিলীন আনোয়ার হোসেনকে মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান। শনিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল ৫টায় জেলা প্রশাসকের পক্ষে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।

জানা যায়, হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের চর আমানউল্যাহ গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ভিটেবাড়িসহ সমস্ত জমি তিন মাস আগে মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়। এরপর থেকে আনোয়ার হোসেন তার পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে ইন্দ্রেশ্বরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বসবাস শুরু করেন। আনোয়ার ও তার পরিবারের দুঃখের কথা শুনে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান তাৎক্ষণিক হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেনের মাধ্যমে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মুজিববর্ষ উপলক্ষে নির্মিত একটি পাকা ঘর তাদের বুঝিয়ে দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান স্যারের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখি, আনোয়ার হোসেন স্কুল আঙিনায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানানো হলে তিনি শনিবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে ঘরের চাবি হস্তান্তর করতে বলেন। 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাড়ি দিয়েছেন। আল্লাহ উনাকে অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখুন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুজিববর্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় মানুষকে নতুন ঘর উপহার দেওয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, এর আওতায় নদীগর্ভে বিলীন হওয়া আনোয়ার হোসেনকে নতুন ঘর দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একজন মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে। সেজন্য সমগ্র বাংলাদেশের গৃহহীনদের নিরাপদ বাসস্থান তৈরি করে দেওয়া হবে। সরকারপ্রধানের এই অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি যথাযথ বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

হাসিব আল আমিন/এসপি