আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওমর ফারুক (ডানে) ও বিএনপি প্রার্থী সাইফুর রহমান

আগামীকাল শনিবার (১৬ জানুয়ারি) ফেনীর দাগনভূঞা পৌরসভায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন দাগনভূঞার ভোটাররা। উৎসাহ থাকলেও কারও কারও মাঝে রয়ে গেছে ইভিএমভীতি।

দাগনভূঞা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ নেই। সবার অপেক্ষা কখন ভোর হবে। কখন ভোট হবে। বিএনপি প্রার্থী স্বপনের পক্ষ থেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ করা হলেও দাগনভূঞায় নির্বাচনের চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুক খান। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দুজনই বিপুল ভোটে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ, বিএনপির মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বেশ জমে উঠেছিল। মিছিল, স্লোগান, সমাবেশ ও পথসভায় মুখরিত ছিল দাগনভূঞা পৌরসভার নয় ওয়ার্ড। প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ভোট পাওয়ার আশায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গেছেন। ভোটারদের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতিশ্রুতি ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ভোট চাইতে দেখা গেছে।

এবার দাগনভূঞা পৌরসভায় চারজন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক খান টানা দুই বার মেয়র ছিলেন। এবার তিনি বিজয়ী হলে তৃতীয় বার টানা দায়িত্ব নেবেন। এছাড়া বিএনপি প্রার্থী সাইফুর রহমান স্বপন গত দুই বারই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুকের কাছে পরাজিত হয়েছেন। মার্কা হাতে পাওয়ার পর থেকে মাঠে ছিলেন জাতীয় পার্টির বিনোদ বিহারি ভৌমিক ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী তারেক আজিজ খান।

বিএনপি প্রার্থী সাইফুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হব। তবে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উটপাখি মার্কার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজন আমার সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেননি তারা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক খান বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। দাগনভূঞা পৌরসভায় আমি মেয়র থাকাকালে ১০ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। এবার নির্বাচিত হলে পৌরসভাকে মডেল পৌরসভা করব।

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার নয় ওয়ার্ডের ১৩ ভোটকেন্দ্রে ৭৩ ভোটকক্ষে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে। ৎ

প্রথমবারের মতো দাগনভূঞা পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হবে। দাগনভূঞা পৌরসভায় ২৫ হাজার ৭২ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৫৬৬ জন ও নারী ভোটার ১২ হাজার ৫০৬ জন। 

নির্বাচনে ১৩ কেন্দ্রে ১৩ জন প্রিসাইডিং অফিসার ও ৭৩ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি কক্ষে দুজন করে মোট ১৪৬ জন পোলিং অফিসার থাকবেন। শুক্রবার দিনভর কেন্দ্রের জন্য যাবতীয় নির্বাচনী মালামাল বুঝিয়ে নিয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা। 

এর আগে চার ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। শনিবার বাকি পাঁচ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচনের প্রতি ভোট কক্ষে একটি করে ৭৩টি ইভিএম দেওয়া হয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে একটি করে অতিরিক্ত ১৩টি ইভিএম দেওয়া হয়েছে। কোনো কারণে ইভিএমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিক বিকল্প ইভিএম ব্যবহার করা যাবে। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। 

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা আক্তার তানিয়া বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র‌্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিবি মাঠে থাকবে।

এএম