অবৈধভাবে নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ড্রেজার মালিক সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও দুই ইউপি সদস্যসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। 

বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সুমন আলী এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইসমাঈল হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদসহ উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। এর ফলে নদী ভাঙন তরান্বিত হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বসতভিটাসহ আবাদি জমি হারাচ্ছেন। গত ২৩ এপ্রিল এ নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। পরে আদালত রৌমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ওই প্রতিবেদনে উপজেলার ৪২ পয়েন্টে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে আদালতকে জানায় পুলিশ। এসব ড্রেজারের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই এবং রৌমারী উপজেলায় সরকারের কোনো বালু মহালও নেই বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

আদালত সূত্র আরও জানায়, বুধবার পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদন গ্রহণ করে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে অপরাধ আমলে নিয়ে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে উল্লেখিত ৪২ পয়েন্টে চলমান ড্রেজার মেশিনের মালিককে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল প্রতিবেদনের দিন ধার্য করেন আদালত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের জন্য রৌমারীতে ড্রেজার মালিক সমিতি গঠন করেছে একটি চক্র। এই সমিতির সভাপতি সুরুজ্জামাল ও সহ-সভাপতি যাদুরচর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বানিজ মেম্বার। এছাড়াও রৌমারী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খলিল মেম্বারসহ মোট ৪২ জন ড্রেজার মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

রৌমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মন্তাছের বিল্লাহ বলেন, অবৈধভাবে নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছিল একটি মহল। বিজ্ঞ আদালত একটি রিপোর্ট চেয়েছিলেন, আমরা রিপোর্টটি দিয়েছিলাম। তবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ এখনো পাইনি।

জুয়েল রানা/আরএআর